Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

বন্ধ হল জগন্নাথ মন্দির, মাহেশে রথযাত্রায় সংশয়

করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের জেরে গত বছর জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার রথে চাপা হয়নি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৫:৫৮
Share: Save:

ভক্তদের প্রবেশ আগেই নিষিদ্ধ হয়েছে তারকেশ্বর মন্দিরে। করোনার ঢেউয়ের ধাক্কায় এ বার হুগলির আর এক তীর্থক্ষেত্র মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের দরজাও ভক্তদের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। রবিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের জেরে গত বছর জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার রথে চাপা হয়নি। এ বার দ্বিতীয় ঢেউয়ের অভিঘাত আরও বেশি। ফলে, অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল রথযাত্রা উৎসবও।
প্রথা অনুযায়ী গত শুক্রবার, অক্ষয় তৃতীয়ায় মাহেশে জগন্নাথ মন্দিরে ‘চন্দনযাত্রা’ উৎসব পালিত হয়। মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী জানান, এ বার সংক্রমণের অবস্থা অনেক বেশি জটিল। মানুষের সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানা অনেক জরুরি। সেই জন্য ‘চন্দনযাত্রা’র দিন থেকে ভক্তদের মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢোকা বন্ধ করা হয়েছিল। এ বার মন্দির চত্বরেই ভক্তদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হল। তবে, মন্দিরে দেবতাদের নিত্যপুজো, ভোগরাগ— সবই হবে। অল্পসংখ্যক পুরোহিত এবং সেবাইত তা করবেন।
সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘স্নানযাত্রা বা রথযাত্রা এ বার চিরাচরিত প্রথা মেনেই হবে, নাকি গত বারের মতো হবে, নাকি আরও বিধিনিষেধের মধ্যে পালন করা হবে, তা বলার সময় এখনই আসেনি। তবে, চিরাচরিত প্রথা মেনে সব কিছু করা মুশকিল। করোনাভাইরাসের দুর্বিপাক থেকে মানুষ সম্পূর্ণ মুক্তি পান, জগন্নাথদেবের কৃপায় সমাজ রোগমুক্ত হোক, এখন এটাই প্রার্থনা।’’
‘চন্দনযাত্রা’র দিনে তিন দেবতার মাথার যন্ত্রণা হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হয়। উপশমের জন্য তিন বিগ্রহের কপালে চন্দন লেপন করা হয়। টানা ৪২ দিন তা করা হয়। তাতেও মাথাব্যথা না-সারায়, তার পরের দিন পাশের স্নানমঞ্চে নিয়ে গিয়ে ২৮ ঘড়া গঙ্গাজল এবং দেড় মণ দুধ দিয়ে তাঁদের স্নান করানো হয়। এই প্রথা ‘স্নানযাত্রা’ উৎসব নামে পরিচিত।
তবে, দুধ-গঙ্গাজলে স্নান করে দেবতাদের অসুস্থতার উপশম হয় না। উল্টে তাঁরা জ্বরে পড়েন। তখন কবিরাজ ডেকে তাঁদের পাঁচন দেওয়া হয়। স্নানযাত্রার ১৫ দিন পরে রথে চেপে তিন দেবতা মাসির বাড়ি (জগন্নাথের সখী পৌর্ণমসি) যান। এই উৎসবই রথযাত্রা। ন’দিন পরে রথে চেপে দেবতারা জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে আসেন। সে দিন উল্টোরথ। এ বার স্নানযাত্রা ২৪ জুন। রথযাত্রা ১২ জুলাই।
গত বছর করোনার প্রথম পর্বে ‘স্নানযাত্রা’ উৎসব পালিত হয় মন্দির প্রাঙ্গণেই। কার্যত ভক্তদের চোখের আড়ালে। রথের টানও হয়নি। গর্ভগৃহ থেকে তিন দেবতার বিগ্রহ নিয়ে গিয়ে রাখা হয় ধ্যানঘরে, অস্থায়ী মাসির বাড়িতে। দেবতাদের প্রতিভূ হিসেবে তিনটি নারায়ণ শিলা মাসির বাড়ির মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় পদব্রজে। উল্টোরথের দিন একই ভাবে তাদের মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Ratha Yatra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE