Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
পরিসংখ্যান নিয়ে সংশয় চাষিদের
Arambagh farmers loss

হুগলিতে চাষে ক্ষতি ১৫০০ কোটি টাকার

ক্ষতিপূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে এখন চাষিদের প্রাপ্তি বলতে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের রবি মরসুমের কিস্তি।

বৃষ্টিতে এ ভাবেই ডুবেছিল ধান জমি। গোঘাটের কুমুড়সায়।

বৃষ্টিতে এ ভাবেই ডুবেছিল ধান জমি। গোঘাটের কুমুড়সায়। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:০৬
Share: Save:

সদ্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হুগলি জেলায় কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ধার্য হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা। শুক্রবার জেলা কৃষি দফতর থেকে এই হিসাব দেওয়া হয়। হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েতের ১৯২১টি মৌজা এবং ১২টি পুর এলাকার ৭৪টি মৌজায় আমন ধান, আলু, ডালশস্য, বাদাম, সর্ষে, পেঁয়াজ এবং আনাজ মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৩৩ শতাংশ। ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যা ৩৬ হাজার ২৯৪।

এ দিকে, ক্ষতিপূরণ কবে মিলবে তার নিশ্চয়তা নেই। তার উপর কৃষি দফতরের এই হিসাব নিয়ে চাষিদের অসন্তোষও সামনে এসেছে। পুরশুড়ার ডিহিবাতপুরের আনাজ চাষি বিজন বাইরি, গোঘাটের ভাদুরের সুদর্শন দে, আরামবাগের বাতানলের শেখ মফিজুল প্রমুখের অভিযোগ, কিসের ভিত্তিতে ৩৩ শতাংশ ক্ষতি দেখানো হচ্ছে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। ধান অনেকটাই ঘরে উঠে গেলেও নতুন বসানো আলু আর আনাজের ১০০ শতাংশই তো নষ্ট হয়েছে।

চাষিদের এই ক্ষোভ নিয়ে সরাসরি জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য মেলেনি। তবে, জেলা পরিষদের কৃষি-সেচ ও স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে বলেন, “আমাদের ব্লক, মহকুমা এবং জেলা স্তরের কৃষি আধিকারিকেরা মাঠে সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। তাঁরা মাটি খুঁড়ে আলুর পচন হচ্ছে কি না দেখেছেন। আনাজের গোড়া পচেছে না কি দেখেছেন। কেটে রাখা ধানে অঙ্কুর হচ্ছে বা রং বদল হয়ে নষ্ট হচ্ছে কি না, তা-ও দেখা হয়েছে। আমরাও সঙ্গে থেকেছি। সেই তদন্তের ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট হয়েছে।”

ক্ষতিপূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে এখন চাষিদের প্রাপ্তি বলতে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের রবি মরসুমের কিস্তি। জমি অনুযায়ী ২০০০ থেকে ৫০০০ হাজার টাকা বৃহস্পতিবার রাত থেকেই চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকতে শুরু করেছে বলে জেলা কৃষি দফতর থেকে জানানো হয়েছে। বিমা বাবদ ক্ষতিপূরণ পেতে অন্তত তিন মাস লাগতে পারে জানিয়ে জেলার এক কৃষি আধিকারিক বলেন, “ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের
আওতায় থাকা সব চাষিদের রবি মরসুমের কিস্তি পাঠানো হয়ে গিয়েছে। তবে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলের টাকা এখনও পাওয়া যায়নি। সেটা পাওয়া গেলে কৃষকদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়।”

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দফতর থেকে ১০০ শতাংশ চাষিরই যাতে কিসান ক্রেডিট কার্ড থাকে সেই চেষ্টা চলছে। জেলার সব চাষিকে বাংলা শস্যবিমা যোজনার আওতায় আনতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি ছাড়াও ধারাবাহিক ভাবে পঞ্চায়েত ধরে শিবির করে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। জেলায় প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ চাষির কিসান ক্রেডিট কার্ড আছে। এই কার্ডের সুবিধা হল— বিমা না
করলেও ঋণের উপর সুদ বছরে মাত্র ৭ শতাংশ। সময়মতো ঋণ শোধ করলে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ছাড়েরও সংস্থান আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE