নতুন সাজে গড়চুমুক চিড়িয়াখানা। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে খুলে যাচ্ছে গড়চুমুক চিড়িয়াখানা। সে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়ায় একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বোতাম টিপে নতুন বাব সজ্জিত এই চিড়িয়াখানা চালু করবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বড়দিনের আগেই এই পর্যটনকেন্দ্রকে চড়ুইভাতির উপযোগী করে তুলতেও উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন।
গত দু’বছর ধরে চিড়িয়াখানাটি বন্ধ রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে চিড়িয়াখানাটির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটানো হয়। ‘মিনি জ়ু’ থেকে এটি ‘মিডিয়াম জ়ু’ স্তরে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু এতদিন এটি চালু না হওয়ায় প্রশ্ন উঠছিল। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় বিধায়ক তথা পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়ের হস্তক্ষেপে এটি চালু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বন দফতর জানিয়েছে।
তবে, হুগলি নদীর পাড় সংলগ্ন এই পর্যটনকেন্দ্রের পিকনিক স্পটটি বর্তমানে ঝোপজঙ্গলে ভরে গিয়েছে। রাস্তায় যত্রতত্র বর্জ্য পড়ে থাকে। দিনকয়েক আগে জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে এই পর্যটনকেন্দ্রেই বন দফতরের বাংলোয় জরুরি বৈঠক করে পিকনিক স্পটে স্বাচ্ছন্দ্য ফেরানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী পুলক রায়।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘শুধু গড়চুমুকই নয়, গাদিয়াড়া এবং শিবগঞ্জ— এই দুই এলাকাও জেলার পর্যটন মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। সেখানেও চড়ুইভাতি করতে আসা পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করা হবে। সব কাজ শেষ করা হবে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে। আমরা চাই, পর্যটকেরা মনের আনন্দে নিরুপদ্রবে চড়ুইভাতি করুন।’’
শীতের মরসুম শুরু হলেই পিকনিক শুরু হয়ে যায়। বড়দিন থেকে তা বাড়ে। গড়চুমুক জেলার পর্যটন মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য জায়গা করে নিয়েছে। প্রতি বছর হাওড়া তো বটেই, পড়শি জেলাগুলি থেকেও এখানে চড়ুইভাতি করতে আসেন হাজার হাজার মানুষ।
গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্রের দু’টি অংশের একটি দামোদরের পাড়ে। অন্যটি হুগলি নদীর পাড়ে। দামোদরের পাড় সংলগ্ন এলাকাটি জেলা পরিষদ একটি বেসরকারি সংস্থাকে ইজারা দিয়েছে। তারাই এর সৌন্দর্যায়ন করেছে। হুগলি নদীর পাড় সংলগ্ন অংশটি জেলা পরিষদের হাতেই আছে। দু’টি এলাকাতেই পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে।
তবে, বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে দামোদরের পাড় সংলগ্ন এলাকাটির ভোল পাল্টালেও হুগলি নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকাটির হাল শোচনীয়। এ দিনের বৈঠকে ওই অংশটি সাফসুতরো করার সিদ্ধান্ত হয়। কিছু বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকাটির ঝোপজঙ্গল কেটে ফেলা হবে। পানীয় জল ও আলোর ব্যবস্থা করা হবে। থাকবেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং অ্যাম্বুল্যান্স। ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকবে পুলিশের টহলদারি। হুগলি বা দামোদরে নৌকাবিহার চলবে না। গরুহাটা মোড় থেকে গাদিয়াড়া পর্যন্ত রাজ্য সড়কটি দ্রুত মেরামত করা হবে। পিকনিকের জায়গায় ডিজে বাজানো যাবে না। চড়ুইভাতি করতে আসা লোকজনের গাড়ি উলুবেড়িয়াতেই পরীক্ষা করা হবে। সন্ধ্যা ছ’টার পরে কোনও মতেই পর্যটনকেন্দ্রে থাকা যাবে না। চড়ুইভাতি করে ফেরার সময়ে পুলিশের যদি মনে হয়, চালক মদ্যপান করেছেন, তা হলে পুলিশ যন্ত্র দিয়ে তা পরীক্ষা করবে। এতে ফিরতি পথে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়ানো যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy