E-Paper

বিপজ্জনক বাড়ি চিন্তা হাওড়ার, প্রস্তুত স্কুলও

রেমালের প্রভাবে রবিবার দুপুর থেকেই প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট শুরু হয়েছে হাওড়ায়। অতিবৃষ্টিতে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কায় আগে থেকেই তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ০৯:৪৯
বিপজ্জনক ডালপালা কাটা চলছে। গাদিয়াড়ায়। নিজস্ব চিত্র

বিপজ্জনক ডালপালা কাটা চলছে। গাদিয়াড়ায়। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টিতে জমা জলের পাশাপাশি, বর্তমানে হাওড়া শহরে সব থেকে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাওড়া পুরসভা চিহ্নিত ৪০০টি বিপজ্জনক বাড়ি। ঘূর্ণিঝড় রেমালের জেরে ওই বাড়িগুলির কতটা ক্ষতি পারে, তা নিয়েই চিন্তিত পুরকর্তারা। ঝড়ের তাণ্ডবে বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় তাই পুরসভা ৮টি ডেমোলিশন স্কোয়াড, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ৩টি দল-সহ পর্যাপ্ত কর্মী প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে ওই সব বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অবিলম্বে অন্যত্র সরতে বলা হয়েছে।

রেমালের প্রভাবে রবিবার দুপুর থেকেই প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট শুরু হয়েছে হাওড়ায়। অতিবৃষ্টিতে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কায় আগে থেকেই তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন ও হাওড়া পুরসভার উদ্যোগে পুর এলাকার ৮টি স্কুলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বড় ধরনের কোনও বিপর্যয় হলে যাতে সেখানে বাসিন্দাদের আশ্রয় দেওয়া যায়। ওই ৮টি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলে রেখেছে পুরসভা। স্কুলগুলিতে জোগান দেওয়ার জন্য ত্রিপল, শুকনো খাবার ও জলের পাউচ বন্দোবস্ত করা হয়েছে সমস্ত বোরো অফিসগুলিতে।পুর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জমা জল সরাতে পঞ্চাননতলা রোড, বেলগাছিয়া, সাঁতরাগাছির মতো হাওড়া শহরের ৬৭টি জায়গায় পাম্প চালানো হবে। এ ছাড়া ৬টি ভ্রাম্যমান পাম্প রাখা হয়েছে। রবিবার সুজয় বলেন, ‘‘হাওড়ায় ৪০০টি বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে আমরা চিন্তিত। ইতিমধ্যে পুরসভায় কন্ট্রোল রুম (নম্বর ৬২৯২২৩২৮৭০) খোলা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা সেটি
খোলা থাকবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন বেশি রাতে ঝড় উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়ার আগে থেকেই পরিস্থিতি নজরে রাখতে পুর ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারেরা সারা রাত কন্ট্রোল রুমে থাকবেন। বাড়ি ভাঙলে বা গাছ পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ৮টি ডেমোলিশন দল ও ৩টি বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। রাস্তায় জমা জল সরাতে পুরকর্মীদের ম্যানহোল খুলে পরিষ্কার করে জল সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুরকর্তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আয়লার পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রয়োজনে তাদের ডেকে পাঠানো হবে। অন্য দিকে, গঙ্গায় সমস্ত লঞ্চ পরিষেবা রবিবার ও সোমবার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমিতি। সমিতির চেয়ারম্যান বাপি মান্না জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে দু’দিন লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে সোমবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঝড়ে যাতে লঞ্চগুলি ভেসে না যায়, সে জন্য সেগুলিকে মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।

রেমালের সঙ্গে যুজতে প্রস্তুতি নিয়েছেন দমদম, উত্তর ও দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষও। পাতিপুকুর থেকে দমদম, বিরাটিমুখী রেললাইন সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু করে যে সব নিচু এলাকায় জল জমার প্রবণতা রয়েছে, সেখানে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দমদম পুরসভার সূত্রের খবর, বিভিন্ন ওয়ার্ডে এলাকায় কমিউনিটি হলগুলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে প্রয়োজনে সংযুক্ত এলাকার লোকেদের সেখানে স্থানান্তরিত করা যায়। পুরসভার সূত্রের খবর, জল নেমে যাওয়ার পরে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্লিচিং ছড়ানোর
পরিকল্পনাও রয়েছে।

সাঁকরাইল ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের তরফ থেকে সাধারণ মানুষকে সাবধান করতে সকাল থেকে চালানো হয়েছে মাইকে প্রচার। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে গঙ্গা নদীতে ফেরি পরিষেবা বন্ধ
রাখা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah Dilapidated House

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy