আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২২-২৩) থেকেই পঠনপাঠন চালু হয়ে যাবে প্রস্তাবিত উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজে। তার আগে জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামো গড়া হবে বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ জন্য আগামী ২৩ জুলাই স্বাস্থ্য দফতরের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল আসছে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে।
ওই হাসপাতালে হবে মেডিক্যাল কলেজ। পরিদর্শনে আরও থাকছেন ‘ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন’-এর প্রতিনিধিরা। কর্পোরেশনই পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজটি করবে। ওইদিনই জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে পরিকাঠামোগত নির্মাণকাজ কোথায় কী ভাবে হবে তা চূড়ান্ত করা হবে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও পরিদর্শন চলাকালীন উপস্থিত থাকার জন্য স্বাস্থ্যভবন থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে, প্রথম বর্ষে ১০০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হবেন। নিয়োগ করা হবে ১২ জন শিক্ষক এবং ২০ জন শিক্ষাকর্মী। পড়ুয়া, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জন্য আবাসন করা হবে। এ ছাড়া সেমিনার হল, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবরেটরি, শব-ব্যবচ্ছেদ কেন্দ্র, ডেমোনস্ট্রেশন কেন্দ্র গড়া হবে। এইসব কাজ শেষ করা হবে শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই।
স্বাস্থ্যভবনের এক পদস্থ কর্তা জানান, করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। অনেক চিকিৎসকেরও প্রয়োজন। মূলত সেই কারণেই প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজগুলির চাপা পড়ে থাকা ফাইলের ধুলো ঝেড়ে ফেলতে উদ্যত হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। সে জন্যই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এই মেডিক্যাল কলেজ চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উলুবেড়িয়ায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ার সিদ্ধান্ত হয় বছর তিনেক আগে। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি হল, একটি জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে একটি মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলা হবে। এ জন্য টাকা দেবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের সেই নীতি মেনেই উলুবেড়িয়ায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর। স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের বক্তব্য, উলুবেড়িয়ায় মেডিক্যাল কলেজ হলে তা হাওড়া সদর এবং উলুবেড়িয়া— এই দুই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই পড়বে।
মেডিক্যাল কলেজের জন্য ১০ একর জমির প্রয়োজন হয়। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে আছে পাঁচ একর জমি। বাকি জমি নেওয়া হয়েছে নিমদিঘির সরকারি বীজখামার থেকে। বীজখামারের জমি প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজের জন্য বছর দেড়েক আগে হস্তান্তর হয়ে গিয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্বাস্থ্যভবন এবং মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া-র তরফ থেকে যৌথ ভাবে এলাকাটি একাধিকবার পরিদর্শন করা হয়। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, পরিদর্শন করে এই জায়গায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ার ক্ষেত্রে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া সবুজ সঙ্কেত দেয়। মেডিক্যাল কলেজ করতে হলে হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা অন্তত ৫০০ থাকার দরকার। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পরিণত হওয়ার ফলে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০০। মেডিক্যাল কলেজ করার লক্ষ্যেই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর।