Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Crime

স্ত্রী-সহ তিন জনকে ছুরির কোপ, ধৃত, দাম্পত্য সম্পর্কে তিক্ততার জেরেই এই হামলা, দাবি স্ত্রীর

চুঁচুড়ার আনন্দমঠ পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের জয়দীপ এবং স্থানীয় মোগলটুলির বছর বাইশের যুবতি দেবস্মিতা স্কুলের সহপাঠী। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম।

joydip Singh

ধৃত জয়দীপ সিংহ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১১
Share: Save:

দাম্পত্য সম্পর্ক তিক্ত হয়ে যাওয়ায় ইতি টানতে চেয়েছিলেন এক মহিলা। সেই ‘অপরাধে’ তাঁকে, তাঁর মাসি ও মেসোমশাইকে ছুরি দিয়ে জখমের অভিযোগে বুধবার রাতে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুঁচুড়ার মিলনপল্লির ঘটনা। ধৃতের নাম জয়দীপ সিংহ। তার স্ত্রী দেবস্মিতা পালের দাবি, সম্পর্কে ইতি টানতে চাইছিলেন। সেই আক্রোশেই জয়দীপ ওই কাণ্ড ঘটায়।

পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

চুঁচুড়ার আনন্দমঠ পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের জয়দীপ এবং স্থানীয় মোগলটুলির বছর বাইশের যুবতি দেবস্মিতা স্কুলের সহপাঠী। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। দেবস্মিতার অভিযোগ, জয়দীপ তাঁর উপরে কর্তৃত্ব খাটাতে চাইত। তা নিয়ে অশান্তি হত। সেই কারণে দেবস্মিতা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেবস্মিতার বাবা-মাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল জয়দীপ। ভয় পেয়ে তিনি সম্পর্ক বজায় রাখেন। ২০২১ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। তবে দু’জনে নিজেদের বাড়িতেই থাকছিলেন। কিন্ত অত্যাচার বেড়ে চলে বলে অভিযোগ দেবস্মিতার। কম্পিউটার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত জয়দীপ। বছর দুয়েক আগে কাজ হারায়। তারপরে একটি বেসরকারি কলেজে বি-টেকে ভর্তি হয়।

কম্পিউটার বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করা দেবস্মিতা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কিয়স্কের অস্থায়ী কর্মী। তাঁর অভিযোগ, ওই কাজ পাওয়ার পর থেকেই তাঁর উপরে নির্যাতন বাড়িয়ে দেয় জয়দীপ। বুধবার সন্ধ্যায় কাজ থেকে তিনি ফেরার সময় বাড়ির কাছে জয়দীপকে দেখে মিলন পল্লিতে মাসি সীমা বসুর বাড়িতে চলে যান। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ জয়দীপ সেখানে হাজির হয়। ‘কথা আছে’ বলে দেবস্মিতার মেসোমশাই অভিজিৎ বসুকে ছাদে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে চিৎকার শুনে ছাদে গিয়ে দেবস্মিতা ও সীমা দেখেন, অভিজিতের গলা ও বুক দিয়ে রক্ত ঝরছে। পিঠে ছুরি দিয়ে আঘাত করছে জয়দীপ। আটকাতে গেলে সীমা-দেবস্মিতাকেও সে ছুরির আঘাত করে।

চিৎকার শুনে পড়শিরা জয়দীপকে আটকান। দেবস্মিতা পুলিশে খবর দেন। আহতদের চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। দেবস্মিতার বাবা বিশ্বজিৎ পালের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করে জয়দীপকে। চিকিৎসকেরা জানান, অভিজিতের আঘাত গুরুতর। তাঁর শরীরে ২৫টির বেশি সেলাই পড়েছে।

বৃহস্পতিবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে জয়দীপ সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রশ্নের জবাব দেয়নি। তার পরিজনরাও কিছু বলেনি। দেবস্মিতার দাবি, অত্যাচারের ভয়ে দিন কয়েক আগে জয়দীপের সঙ্গে অযোধ্যা পাহাড়ে ঘুরতে যান। সেখানেও অত্যাচার থামেনি। সোমবার বাড়ি ফেরেন। এরপরই সম্পর্কে ইতি টানার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন জয়দীপকে। তার পরেই এই ঘটনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE