সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন। ফলে পঠনপাঠন নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল, তা আপাতত মিটেছে। কিন্তু চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা সেই সুযোগ পাননি। এই অবস্থায় বিশেষত করণিকের কাজ সামলাতে হিমশিম অবস্থা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে। মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে কয়েক দিন আগে। তার পরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিও শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই কাজ সামাল দেওয়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকেরা চিন্তায় পড়ছেন।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষিকারা জানান, ভর্তির ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া, টাকার রসিদ দেওয়া ইত্যাদি কাজ মূলত করণিকদেরই করতে হয়। সেই কাজ এখন শিক্ষকদের করতে হচ্ছে। হুগলি জেলার খানাকুলের পাতুল গণেশবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের টিচার ইন চার্জ শেখ রিজাবুল ইসলাম জানান, তৃতীয় শ্রেণির কর্মী অর্থাৎ করণিক এক জনই ছিলেন। তাঁর চাকরি বাতিল হয়েছে। ফলে ওই কর্মী স্কুলে আসছেন না। সেই কারণে অন্য কোনও উপায় না থাকায় পড়ুয়া ভর্তি-সহ অফিসের যাবতীয় কাজ শিক্ষকদেরই করতে হচ্ছে। ওই কর্মীর কথায়, ‘‘স্কুলে যাচ্ছি না। গ্রীষ্মের ছুটির পরে আমাদের সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগোব।’’ আরামাবগের মধুরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চাকরিহারা তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মী েবলেন, ‘‘আমাদের চাকরিই তো বাতিল হয়ে গিয়েছে। স্কুলে যাব কী করে!’’
তৃতীয় শ্রেণির কর্মীর অভাবে ভুক্তভোগী রামনগর অতুল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিত আঢ্য, রাজহাটি বন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবেন্দু সামন্ত প্রমুখ জানান, স্কুলের দৈনন্দিন হিসাবপত্র থেকে শিক্ষকদের বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, শিক্ষাশ্রী, পড়ুয়াদের কন্যাশ্রী, নানা রকমের বৃত্তি, সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেল ইত্যাদির তথ্য পোর্টালে আপলোড করা, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের টাকা দেওয়ার মতো সামাজিক প্রকল্পের রূপায়ণও হয় তৃতীয় শ্রেণির কর্মীদের হাত ধরেই। তাঁদের ছাড়া অডিট করাও অত্যন্ত কঠিন।
হাওড়া জেলার জয়পুরের ভাটোরা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের এক জন শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে। প্রধান শিক্ষক শেখ নইমের কথায়, ‘‘একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি শুরু হয়েছে। ওই শিক্ষাকর্মী না থাকায় সেই কাজে সমস্যা হচ্ছে। তাঁর কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষকদেরই।’’ শ্যামপুরের গুজারপুর সুরেন্দ্র বিদ্যাপীঠে তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মীর চাকরি গিয়েছে। ওই শিক্ষাকর্মীর অভাবে এই স্কুলেও একই পরিস্থিতি বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক নীলেশ পাখিরা। তিনি বলেন, ‘‘করণিক না থাকায় একাদশে ভর্তিতে সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষকদেরই এই সংক্রান্ত কাজ করতে হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)