অসহায়: গোবিন্দ সাধু। নিজস্ব চিত্র
ঠিকাদারের মাধ্যমে ভিন রাজ্যে জুট মিলে কাজে গিয়েছিলেন চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার বাসিন্দা গোবিন্দ সাধু। কয়েক মাস আগে সেখানে কাজ করার সময় যন্ত্রে তাঁর বাঁ হাত কাটা যায়। আর কাজ করতে পারেন না। অভিযোগ, ঠিকাদার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন না। এই অবস্থায় তাঁর কার্যত পথে বসার অবস্থা। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার।
কোনও উপায় না দেখে ওই পরিযায়ী শ্রমিক চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আইন সহায়তা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হন। ঠিকাদারের থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে শ্রম দফতর এবং পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ওই সংস্থা। সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দিতে ঠিকাদার বাধ্য। না হলে তা বিশ্বাসভঙ্গ এবং আন্তঃরাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক আইনে বিধিভঙ্গের শামিল হবে।’’
চুঁচুড়ার উপ শ্রম-কমিশনার সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিতে হবে। আমাদের এক্তিয়ার কতটা, দেখতে হবে। আইন অনুযায়ী যদি কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার থাকে, নিশ্চয়ই নেওয়া হবে।’’ ঠিকাদার বীরেন্দ্র মাহাতোর অবশ্য দাবি, তিনি গোবিন্দকে চেনেনই না। শুনে আকাশ থেকে পড়ছেন বিপাকে পড়াওই শ্রমিক।
গোবিন্দ জানান, তিনি গোন্দলপাড়া জুট মিলের ঠিকাকর্মী ছিলেন। গত এক বছর মিলটি বন্ধ। গত এপ্রিল মাসে তিনি ওড়িশার কটকের ঢেঙ্কানলের জুট মিলে ঠিকাকর্মী হিসাবে কাজে ঢোকেন বাঁশবেড়িয়ার বাসিন্দা বীরেন্দ্রর মাধ্যমে। এক মাস পরেই ওই দুর্ঘটনা। ঠিকাদার তাঁকে কটক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে বাড়ির লোকেরা তাঁকে এনে কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দু’মাস সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
গোবিন্দ বলেন, ‘‘সংসার চলছে না। ওষুধ কিনতে পারছি না। ঠিকাদার জানিয়ে দিয়েছেন, এক টাকাও দেবেন না।’’ বীরেন্দ্রর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই ব্যক্তিকে কোথাও নিয়ে যাইনি। কোনও চুক্তি নেই। কী করে বলছেন, ওঁকে নিয়ে গিয়েছি? ওঁকে চিনিই না।’’
বিশ্বজিতের খেদ, ‘‘শ্রমিকের দুর্দশার অন্ত নেই। পরিযায়ী শ্রমিকের অবস্থা আরও খারাপ। ওই শ্রমিকের পরিস্থিতি আরও এক বার তাপ্রমাণ করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy