Advertisement
E-Paper

আদালতের কাছেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণের অভিযোগ

সুজিতকুমার ভট্টাচার্য নামে ওই বৃদ্ধ থাকেন ধনেখালির গোপীনগরে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, চুঁচুড়া থানা প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ০৮:৪৬
বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ।

বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ। প্রতীকী চিত্র।

হুগলি জেলা আদালত এবং চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের কাছেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে এক বৃদ্ধকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে জমি রেজিস্ট্রির চেষ্টা করার অভিযোগ উঠল এক ঠিকাদার এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে চুঁচুড়ায় এমন ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেলে দুষ্কৃতীদের পরিকল্পনা বানচাল হয়।

সুজিতকুমার ভট্টাচার্য নামে ওই বৃদ্ধ থাকেন ধনেখালির গোপীনগরে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, চুঁচুড়া থানা প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি। ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে আটক করেও ছেড়ে দেওয়া হয়। বুধবার পুলিশ কমিশনারকে ই-মেলে অভিযোগ জানানো হলে থানা এফআইআর নেয়। তবে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।

মঙ্গলবার এফআইআর নিতে না-চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে চুঁচুড়া থানা। আটক করেও দু’জনকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তারা মন্তব্য করেনি। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

সুজিতবাবু জানান, মঙ্গলবার সকালে একটি মামলা সংক্রান্ত কাজে স্থানীয় এক জনের মোটরবাইকে তিনি চুঁচুড়া আদালতে আসেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ফেরার সময় একটি গাড়ি পথ আটকায়। ৪-৫ জন নেমে এসেমাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে আমাকে গাড়িতে তুলে চোখে কালো কাপড় বেঁধে নিয়ে চলে যায় চুঁচুড়া রেজিস্টি অফিসে। সেখানে চোখ খোলে। মূল অপরাধী প্রোমোটার এবং আরও দু’জনকে চিনি। ওরা আমার একটি জমি জোর করে লিখিয়ে নেওয়ারচেষ্টা করে।’’

ইতিমধ্যেই সুজিতকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁর সঙ্গী ফোনে সুজিতের ভাইপো তথা কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী অনিমেষ ভট্টাচার্যকে জানান। অনিমেষ চুঁচুড়া থানায় জানান। এর পরেই পুলিশ রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সুজিতকে উদ্ধার করে। দু’জনকে আটক করা হয় ঘটনাস্থল থেকেই। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে অনিমেষ চুঁচুড়া থানায় আসেন। তাঁদের অভিযোগ, থানা লিখিত অভিযোগ নেয়নি। আটক দু’জনকেও ছেড়ে দেয়।

বুধবার থানার সামনে দাঁড়িয়ে অনিমেষ বলেন, ‘‘থানার ভূমিকার কথা আজ কমিশনারেটে ই- মেলে জানাই। এর পরেই থানা এফআইআর নেয়। খোদ পুলিশ কমিশনারেটের অফিসের পাশ থেকেই যে ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে কাকাকে অপহরণ করা হয়, ভয়ের ব্যাপার। পুলিশ অবশ্য অপহরণের ধারা দেয়নি। অন্য কয়েকটি ধারায় মামলা করেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ধনেখালির বান্না মৌজায় কাকার তিন বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমি হাতাতেই দলবল নিয়ে প্রোমোটার এই কাজ করেছে। আগেও এক বার দুষ্কৃতীরা এ জন্য বাড়িতে হামলা চালায়। এই নিয়ে ধনেখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও কাজ হয়নি।’’

গোটা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির আইনজীবী-নেতা স্বপন পালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিপি অফিসের পাশেই বন্দুক দেখিয়ে অপহরণ। কেমন সুশাসন চলছে, সহজেই অনুমেয়।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোদীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘এ আর নতুন কী! তৃণমূলের আমলে রাজ্য জুড়েই আইনশৃঙ্খলার অবনতি ধারাবাহিক ঘটনা। না হলে প্রকাশ্য দিবালোকে ওই রকম জায়গায় এ সব হয়!’’

হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান, তৃণমূল নেতা অমিত রায় অবশ্য আইনশৃঙ্খলার অবনতির কিছু দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সকলের সঙ্গে পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশই ওঁকে উদ্ধার করেছে। দোষীরা দ্রুত গ্রেফতার হবে।’’

Chinsurah Firing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy