E-Paper

মজুত দু’লক্ষ টনের বেশি, আলুর ঠাঁই হিমঘরের শেডে

রাজ্যের ঘোষণা ছিল, রাজ্যবাসীর চাহিদা না মিটিয়ে আলু ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানো যাবে না। এক সময়ে দেখা যায়, খোলা বাজারে আলুর কেজি ৪০ টাকা ছাড়িয়েছে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩১
হিমঘরের বাইরে আলুর বস্তা রাখা।

হিমঘরের বাইরে আলুর বস্তা রাখা। নিজস্ব চিত্র।

গত মরসুমের অন্তত দু’লক্ষ টনের কাছাকাছি আলু এখনও রাজ্যের হিমঘরগুলিতে রয়ে গিয়েছে। আগামী মরসুমের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের বাধ্যবাধকতায় হুগলি এবং বর্ধমানে মজুত আলু হিমঘরের বাইরের শেডে বের করে দিয়েছেন হিমঘর মালিকেরা। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ায় হিমঘরে এত পরিমাণ আলু জমে যে, শেডে রাখা যায়নি।

আলু ব্যবসায়ীদের অনুযোগ, রাজ্য সরকার ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠাতে না দেওয়াতেই এই পরিস্থিতি। সার্বিক পরিস্থিতিতে তাঁদের যেমন ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে, তেমনি জলদি আলুর মরসুমে চাষি দাম পেলেন না।

গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে রাজ্য সরকার ভিন্‌ রাজ্যে আলু পাঠানোয় রাশ টানে। রাজ্যের ঘোষণা ছিল, রাজ্যবাসীর চাহিদা না মিটিয়ে আলু ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানো যাবে না। এক সময়ে দেখা যায়, খোলা বাজারে আলুর কেজি ৪০ টাকা ছাড়িয়েছে। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ব্যবসায়িক স্বার্থে ভিন্‌ রাজ্যে বেশি পরিমাণে আলু পাঠিয়ে দিচ্ছেন। যে কারণে চাহিদা এবং জোগানের ভারসাম্য রক্ষিত না হওয়ায় খোলা বাজারে আলুর দাম বাড়ছে।

মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মা প্রকাশের পরেই রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন পুরোপুরি কড়া অবস্থান নেয়। অসম, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহারের সীমানায় আলুর ট্রাক আটকে দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা বোঝানোর চেষ্টা করেন, আগাম ঘোষণা ছাড়াই রফতানি বন্ধ হলে সেই সব রাজ্যের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গের দায়ে তাঁরা অভিযুক্ত হবেন। যে আলু ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে, তার খোসা মোটা। এই রাজ্যের মানুষ ওই প্রজাতির আলু খেতে অভ্যস্ত নন। রাজ্য অবশ্য নিজেদের অবস্থানে অনঢ় থাকে।

রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসনের কাছে তথ্যের গরমিল ছিল। আমাদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে এখনও রাজ্যের হিমঘরগুলিতে অন্তত দু’লক্ষ টন আলু থেকে গেল। হুগলি, বর্ধমানে হিমঘরের মালিকেরা শেডের বাইরে আলু বের করে দিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার অধিকাংশ আলুই ভিন্‌ রাজ্যে পাঠানোর ছিল। পরিমাণ বেশি হওয়ায় সেখানকার আলু শেডে বের করা যায়নি। এই আলুই বাজার জুড়ে থাকায় বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদে জলদি আলু উঠলেও চাষিরা দাম পেলেন না।’’

রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের বাজারে আলুর জোগান নিশ্চিত করতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জোগানের সমতা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, এমন কোনও পদক্ষেপ রাজ্য সরকার করতে চায়নি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy