E-Paper

সর্বক্ষণের কর্মী চেনাতে ‘লেনিন-দর্শন’ সিপিএমের

লেনিনের দর্শন ব্যাখ্যা করে দলের এরিয়া কমিটি নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সর্বক্ষণের কর্মী হলেন এক জন ‘পেশাদার বিপ্লবী’, যিনি শুধুমাত্র দলীয় ভাতার উপরে নির্ভরশীল।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫১
ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ (লেনিন)।

ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ (লেনিন)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ভোট-বাক্সে ক্ষয় অব্যাহত। তৃণমূলকে প্রতিহত করার মতো শক্তপোক্ত সংগঠন গড়ে ওঠেনি অধিকাংশ এলাকায়। সর্বক্ষণের কর্মীর অভাবে ভুগছে দল। তহবিলের অবস্থাও ভাল নয়। এই অবস্থায় সর্বক্ষণের কর্মী (হোলটাইমার) করার জন্য অযোগ্য কাউকে স্রেফ কিছু ভাতা পাইয়ে দেওয়ার জন্য সুপারিশ এলে বিরক্তি আসাই স্বাভাবিক। কার্যত এই বিরক্তিই ফুটে উঠেছে সিপিএমের হুগলি জেলা সম্মেলনে পেশ করা সাংগঠনিক-রাজনৈতিক খসড়া প্রতিবেদনে।

এই প্রসঙ্গে লেনিনের দর্শন ব্যাখ্যা করে দলের এরিয়া কমিটি নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সর্বক্ষণের কর্মী হলেন এক জন ‘পেশাদার বিপ্লবী’, যিনি শুধুমাত্র দলীয় ভাতার উপরে নির্ভরশীল। সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে কারও নাম সুপারিশ করার সময়ে এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ‘বিচ্যুত’ না-হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

২১-২৩ সেপ্টেম্বর সিঙ্গুরে সিপিএমের জেলা সম্মেলন হয়। সেখানে পেশ করা প্রতিবেদনে কিছুটা আক্ষেপের সুরেই লেখা হয়েছে, অন্য কোনও কাজ পাচ্ছেন না বলে সর্বক্ষণের কর্মী করে কাউকে কিছু ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য আবেদন বা সুপারিশ করা হয়।

দলের সর্বক্ষণের কর্মীদের দলীয় তহবিল থেকে ভাতা দেয় সিপিএম। তাঁরা শুধু দলেরই কাজই করেন। অন্য কোনও পেশায় তাঁরা যুক্ত থাকেন না। ভবিষ্যতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে, এমন কর্মীদেরই সর্বক্ষণের কর্মী করে সিপিএম। হুগলিতে এখন সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মীর সংখ্যা ৮০। গত তিন বছরে সাত জনকে সর্বক্ষণের কর্মী করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ।

সর্বক্ষণের কর্মী বাছাইয়ের সময়ে কী মাথায় রাখা উচিত, তা-ও স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, ‘লেনিনের তত্ত্বে কোথাও হোলটাইমার বা সর্বক্ষণের কর্মী বলে উল্লেখ নেই। রয়েছে প্রফেশনাল রেভলিউশনারি বা পেশাদার বিপ্লবীর কথা।’ দলের এক নেতার কথায়, ‘‘অযোগ্য কাউকে সর্বক্ষণের কর্মী করলে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরি হয় না। অর্থ খরচ হয় মাত্র। সংশ্লিষ্ট কর্মীর মেধা, পরিশ্রম ক্ষমতা, দল ও দলের গণ সংগঠনে কাজ করার ইচ্ছাশক্তি, দলের নীতি-আদর্শ, শৃঙ্খলা ও নানা বিষয়ে দলীয় অবস্থান সম্পর্কে তিনি কতটা অবহিত, তা বিচার করে সর্বক্ষণের কর্মী বাছাই করতে হয়। কাজটা খুবই কঠিন।’’

দলে সর্বক্ষণের কর্মীর অভাবের কথা উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। লেখা হয়েছে, ‘যেখানে কোনও সর্বক্ষণের কর্মী নেই, সেখানে ন্যূনতম এক জনকে সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তা সর্বত্র করা যায়নি।’’ আরও লেখা হয়েছে, সম্ভাবনাময় অনেক তরুণ কর্মীর সর্বক্ষণের কর্মী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। সর্বক্ষণের কর্মীদের ভাতাও বাড়ানো প্রয়োজন। সে কারণে দরকার আয়বৃদ্ধি। দলীয় সদস্যেরা (যাঁরা আয়ের নির্দিষ্ট অংশ দলকে ‘লেভি’ হিসেবে দেন) প্রকৃত আয় গোপন না করলে এবং ধারাবাহিক অর্থসংগ্রহ করা হলে সেই কাজ সম্ভব।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPIM Left

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy