সকালে টোটো নিয়ে স্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন এক যুবক। এমন সময়ে রাস্তার পাশের আবর্জনারস্তূপ থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজে চমকে গিয়ে টোটো থামান। খুঁজতে গিয়ে দেখতে পান, আবর্জনার স্তূপের মধ্যে কাপড়ের পুঁটলির মধ্যে থেকে বেরিয়ে রয়েছে একসদ্যোজাতের মাথা। তড়িঘড়ি ওই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই সদ্যোজাত। বুধবার সকালে, বালির ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ টোটো নিয়ে বালির ৫৪ নম্বর বাস স্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন চন্দন মল্লিক নামে ওই যুবক। সেই সময়ে পঞ্চাননতলায় নিবেদিতা সেতুর নীচে পুরসভার অস্থায়ীভাগাড় থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান চন্দন। তাঁর কথায়, ‘‘সন্দেহ হওয়ায় টোটো থামিয়ে নেমে ওই ভাগাড়ে খুঁজতে শুরু করি। এর পরেই শিশুটিকে দেখতে পাই।’’ ওই যুবক জানাচ্ছেন,আবর্জনার মধ্যে পড়ে থাকায় সদ্যোজাতের শরীরে পোকা ঘুরছিল। কোনও মতে সেখান থেকে শিশুটিকে তুলে এনে, তার গা-হাত-পা মুছিয়ে অন্য টোটোচালকদের ফোন করে বিষয়টি জানান চন্দন। খবর পেয়ে অন্য টোটোচালকেরাওততক্ষণে সেখানে এসে পৌঁছন। এর পরে সকলে মিলে ওই সদ্যোজাতকে নিয়ে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে ওইশিশুকন্যার প্রাথমিক চিকিৎসা করে বালি থানায় খবর পাঠান নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
এর পরে পুলিশ গিয়ে ওই সদ্যোজাতকে লিলুয়া টি এল জয়সওয়াল হাসপাতালে ভর্তি করায়। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কৈলাস মিশ্র। তিনি জানান, সকালেই চিকিৎসকেরা শিশুটিকেপরীক্ষা করে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের দিক থেকে তার কোনও সমস্যা নেই। তবে কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তার পরে আইন মেনে হোমে পাঠানো হবে। কৈলাস বলেন, ‘‘চিকিৎসা থেকে হোমে পাঠানো পর্যন্ত কোথাও যাতে সমস্যা না হয়, সেই দায়িত্ব আমরা নিয়েছি।পুলিশকেও বলেছি, এমন অমানবিক ঘটনা কে বা কারা ঘটাল, তা তদন্ত করে দেখতে।’’
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, যে বা যারা শিশুটিকে সেখানে ফেলে গিয়েছে, তারা সেতুর নীচে ওই ভাগাড় রয়েছে এবং রাতে ওই এলাকা পুরো ফাঁকা থাকে, সে সম্পর্কে ভাল ভাবেই জানত। ফলে স্থানীয় ভাবে খোঁজখবর শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, ওই এলাকায়ঢোকা-বেরোনোর রাস্তায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে কিনা, তারও খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিশুটি ভাল আছে। তবে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সমস্ত রিপোর্ট ভাল এলে, তার পরে শিশুটিকে আইনি প্রক্রিয়া মেনে হোমে পাঠানো হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)