Advertisement
১১ মে ২০২৪
Malnutrition

এক বছর ধরে বিশেষ কর্মসূচি চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা কমল হাওড়ায়, দাবি

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ ভাবে অঙ্গনওয়াড়ির প্রতিটি শিশুকে সপ্তাহে তিন দিন করে গোটা ডিম দেওয়া হয়।

অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা কমল।

অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা কমল। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৪
Share: Save:

করোনাকালে হাওড়া জেলায় চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১২০০-য় পৌঁছে গিয়েছিল। গত বছর টানা বিশেষ কর্মসূচি চালিয়ে সেই সংখ্যা ডিসেম্বরে ৩২৪-এ নামিয়ে আনা গিয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, বিশেষ কর্মসূচি এখনই বন্ধ করা হচ্ছে না। চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা তাঁদের লক্ষ্য।

বিশেষ কর্মসূচিটি কী?

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ ভাবে অঙ্গনওয়াড়ির প্রতিটি শিশুকে সপ্তাহে তিন দিন করে গোটা ডিম দেওয়া হয়। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জন্য বরাদ্দ করা হয় প্রতিদিন একটি করে গোটা ডিম। তাদের জন্য চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করে ওষুধের ব্যবস্থাও করা হয়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনার সময়ে বাড়ি বাড়ি যে খাবার দেওয়া হত, তা বেশ কিছু পরিবারের সবাই ভাগ করে খেতেন। বঞ্চিত হত শিশুটি। সে তার প্রয়োজনীয় খাবার পেত না। ফলে, তার ওজন কমছিল। পরে ওইসব পরিবারের পুরুষদের কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসনের ওই কর্তার কথায়, ‘‘ওই সব পরিবারের দারিদ্রই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ফলে কম ওজনের শিশুর সংখ্যা কমেছে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ায় মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ছ’হাজার। ওই কেন্দ্রগুলিতে ০-৬ বছর বয়সি উপভোক্তা শিশুর সংখ্যা তিন লক্ষ। ২০০০ সালের মাঝামাঝি থেকে করোনার জন্য বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রগুলি। শিশুগুলি পুষ্টিকর খাবার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। তবে, কয়েক মাস পরই শিশুদের বাড়ি গিয়ে খাবার দেওয়া শুরু হয়।

২০২১ সালের জুলাই মাসে ফের চালু হয় অঙ্গনওয়াড়ি। সেই সময়ে ফের শিশুদের ওজন নেওয়া শুরু হয়। দেখা যায়, প্রায় ১২০০ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তাদের ওজন এতটাই কম যে তাদের পুষ্টির দিক দিয়ে ‘বিপজ্জনক শ্রেণিতে’ (লাল) ফেলা হয়। তারপরেই নেওয়া হয় বিশেষ কর্মসূচি।

জেলা পরিষদের নারী ও শিশুকল্যাণ বিষয়ক কর্মাধ্যক্ষ আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘‘শিশুর অপুষ্টির নানা কারণ থাকে। শারীরিক সমস্যা, পারিবারিক দারিদ্র, জিনগত সমস্যাও চরম অপুষ্টির জন্য দায়ী। তাই চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা অসম্ভব। চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যার একটা গড় থাকে। তার নীচে তা নামে না। এই জেলায় সেই গড় ৩০০-র আশপাশে থাকে।’’

২০১৬ সালেও একবার এই জেলায় চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় হাজার হয়ে যায়। তখনও বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে তা কমিয়ে ৩০০-য় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়। সেই থেকে জেলায় চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা ৩০০-র আশপাশেই ছিল। ফের সেই সংখ্যার ধারেকাছে চরম অপুষ্ট শিশুর সংখ্যা চলে আসায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে বলে দাবি করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malnutrition Howrah Municipaity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE