Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Nurse

হাসপাতালে ঢুকে নার্সকে হুমকি বিধায়কের! তার পরেই এল বদলির চিঠি, চুঁচুড়ার হাসপাতালে বিক্ষোভ

গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই হাসপাতালে চড়াও হন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তাঁর দাবি ছিল, এক রোগীকে সঠিক পরিষেবা দেওয়া হয়নি। নার্স বন্দনা দত্তগুপ্তকে তিনি অপমান করেন বলে অভিযোগ।

representational image of nurse

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৫
Share: Save:

হাসপাতালে দলবল নিয়ে ঢুকে নার্সকে অপমান করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালের ঘটনা। বিধায়ক বদলির হুঁশিয়ারি দেন বলেও অভিযোগ। এর পরেই নার্সকে বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। একটি নয়, দু’টি। একটি জেলা এবং একটি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ হাসপাতালের নার্সদের সংগঠনের। বিধায়ককে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবি জানিয়ে হাসপাতাল সুপারকে ঘেরাও করেন নার্সরা। মিছিল করে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। বিধায়ক স্পষ্টই জানিয়েছেন, তিনি ক্ষমা চাইবেন না।

গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই হাসপাতালে চড়াও হন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তাঁর দাবি ছিল, এক রোগীকে সঠিক পরিষেবা দেওয়া হয়নি। ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স বন্দনা দত্তগুপ্তকে তিনি অপমান করেন বলে অভিযোগ। তার পরেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তাঁকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মুর্শিদাবাদের অনুপনগর গ্রামীণ হাসপাতালে বদলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সিএমওএইচ জানান, এ ক্ষেত্রে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ বহাল থাকবে। বন্দনার স্বামী শয্যাশায়ী। তাঁর ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ওই নার্সের ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন, এই অবস্থায় মু্র্শিদাবাদে গিয়ে চাকরি করা তাঁর পক্ষে কঠিন।

এর পরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে নার্সেস ইউনিট। তাদের দাবি, বন্দনার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। হাসপাতাল থেকে আয়া সরাতে হবে। রোগী এবং নার্সের অনুপাতে ভারসাম্য আনতে হবে৷ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানিয়েছেন, তিনি এই দাবি সিএমওএইচের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। নার্সেস ইউনিটের রাজ্য সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেদিন ওই নার্সের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা। রোগীর বাড়ির লোক যেটা বললেন, সেটা সত্যি হয়ে গেল, আর নার্স যেটা বলল সেটা মিথ্যা!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যখন তখন এ ভাবে দলবল নিয়ে হাসপাতালে ঢুকে পড়া হলে নার্সদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা বলেছি, আগে হাসপাতালের পরিকাঠামো ঠিক করুন। চিকিৎসা দেওয়ার সুস্থ পরিবেশ রাখুন। এক জন নার্স যদি কোনও ভুল করেন, তাঁকে শো-কজ় করতে হবে, তদন্ত হবে তা না করে দোষী সাব্যস্ত করা হল। এমনটা হতে পারে না।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি করের সঙ্গেও কথা বলতে যান সংগঠনের সদস্যেরা।

এ বিষয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘ওই দিনের ঘটনার বিষয়ে সব প্রমাণ স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সুপার এবং সিএমওএইচ। ওঁরা আন্দোলন করতেই পারেন, আমি সাধারণ মানুষের জন্য গিয়েছি। আমার ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন নেই। একটা মেয়ে অভিযোগ করেছেন, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়েছি। আমার সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা জনপ্রতিনিধি।’’

এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘এর আগেও নার্সদের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য বিধায়ক করেছে। বিধায়ক একটি হাসপাতালের মহিলা বিভাগে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঢুকে তাণ্ডব করেছেন, এর ধিক্কার জানাই। ওঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nurse Assault Transfer TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE