ডেঙ্গিতে মৃত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অনির্বাণ হাজরা। ছবি: সংগৃহীত।
শুধু পরিবার-পরিজনেরা নন, শুক্রবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, চিকিৎসক অনির্বাণ হাজরার ডেঙ্গুতে মারা যাওয়ার খবর শুনে শোকস্তব্ধ হয়ে গিয়েছে সাঁকরাইলের নলপুর বেতিয়াড়ি গ্রাম।
চিকিৎসার পাশাপাশি বাম সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন অনির্বাণ। ২০০৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সাঁকরাইল বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছিলেন। মাত্র ১১৩ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। ২০১১ সালেও বিধানসভা ভোটেও লড়েছিলেন তিনি।
বেতিয়াড়ি গ্রামেই বেড়ে ওঠা অনির্বাণের। বর্তমানে মা এবং দুই বোন থাকলেও তিনি স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে নিয়ে রামরাজাতলায় থাকতেন। শুক্রবার সকালে গ্রামে তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসক নিয়মিত গ্রামে এসে বিনা পয়সায় এলাকাবাসীর চিকিৎসা করতেন। প্রতি রবিবার এবং ছুটির দিনে তিনি সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে আসতেন।
প্রয়াত চিকিৎসকের আত্মীয় রতন নস্কর শুক্রবার বলেন, ‘‘এলাকার অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন অনির্বাণ। মানুষ প্রয়োজনে তাকে পাশে পেতেন।’’ স্থানীয় বেতিয়াড়ি মেহনতি সঙ্ঘ জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে দু’দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। কিন্তু আনির্বাণের মৃত্যুর খবর আসতেই যাবতীয় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডেঙ্গি সংক্রমিত হওয়ায় গত ১ নভেম্বর অনির্বাণকে ভর্তি করানো হয়েছিল সেখানে। ডেঙ্গি চিকিৎসাবিধি মেনেই শুরু হয় চিকিৎসা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। প্লেটলেট নেমে আসে ১৬ হাজারে। এর পর প্লেটলেট ট্রান্সফিউশনের পরে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
শুক্রবার সকালে ফের অনির্বাণের শারীরক পরিস্থিতি খারাপ হয়। হৃদ্যন্ত্র এবং রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দেখা দেয়। দ্রুত তাঁকে সিসিইউতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু হলেও প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আইডি হাসপাতালের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কোভিড পরিস্থিতিতেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অনির্বাণ। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। এ বার জীবনের লড়াইতেও হেরে গেলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy