বাগনান-১ ব্লকের হাটুরিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জলের ট্যাঙ্কের উপরে বাসা করেছিলো এক লক্ষ্মীপেঁচা (বার্ন আউল)। বাসায় চারটি পেঁচার ছানা হয়েছিল। হঠাৎ ছানাগুলি রবিবার বাসা থেকে নীচে পড়ে যায়। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান আর স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীদের সহায়তার নিরাপদে মায়ের কাছে ফিরল তারা।
হাটুরিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রসূন সামন্ত নিজে এক জন পরিবেশ সচেতন মানুষ। ছানাগুলিকে যাতে অন্য পশু আক্রমণ করতে না পারে, ঘটনার কথা জেনেই তিনি তাদের সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে রাখতে বলেন পাম্প অপারেটর অসীম জানা এবং পাম্প মেকানিক সাইফুল ইসলামকে। এর পর যোগাযোগ করেন স্থানীয় পরিবেশকর্মী তথা বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামানিকের সঙ্গে। মধ্যেই চিত্রক এবং তাঁর সহকারী সুমন্ত দাস, ইমন ধাড়া ও সুরজিৎ দোয়ারি ঘটনাস্থলে যান এবং ছানাগুলি উদ্ধার করেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্যত্র।
আরও পড়ুন:
চিত্রক জানান, ছানাগুলি ছোট ছিল এবং বাসা থেকে তাদের সরিয়ে দিলে বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সুপ্রসূন ছানাগুলিকে তাদের মায়ের কাছে রাখার জন্য সক্রিয় হন। চিত্রকেরা ট্যাঙ্কের কর্মী এবং এলাকার ছাত্র সেখ সাহিলকে নিয়ে ট্যাঙ্কের একদম উপরে ওঠেন। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় লক্ষ্মীপেঁচার ছানাগুলিকে পুনরায় বাসায় রাখা হয় এবং বড়ো ত্রিপল দিয়ে জল ট্যাঙ্ক ঘিরে দেওয়া হয়।
চিত্রক বলেন, ‘‘যে কোনও প্রাণীকে এলাকাচ্যুত করলে এলাকার পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হয়। এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান ও গ্রামবাসীরা যে ভাবে পরিবেশের কথা ভেবে পেঁচাশিশুদের নিজের বাসাতেই ফিরিয়ে দিলেন, তা খুবই সদর্থক পদক্ষেপ।’’ তিনি জানান, লক্ষ্মীপেঁচা প্রতি বছর প্রচুর ইঁদুর, সাপ খেয়ে এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। শীতকাল লক্ষ্মীপেঁচাদের প্রজননের সময়। সুপ্রসূনের মন্তব্য, ‘‘আমরা এলাকাবাসীর মধ্যে পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার চালাই। আগের চেয়ে মানুষ এখন অনেক সচেতন হয়েছেন।