E-Paper

পশুপাখির হাট সরুক, খোলা চিঠিতে আর্জি

ভাষা শহিদদের স্মৃতিতে শ্রীরামপুরে গঙ্গার নিশান ঘাটের পাশে ‘ভাষা বাগান’ রয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে প্রতি রবিবার সেখানে পশুপাখির হাট বসছে।

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১২
শ্রীরামপুরে পশুপাখির হাটে। নিজস্ব চিত্র

শ্রীরামপুরে পশুপাখির হাটে। নিজস্ব চিত্র

প্রখর রোদে সবাই যখন ছায়া খুঁজছে, খোলা আকাশের নীচে খাঁচাবন্দি কুকুরছানা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে।

ভাষা শহিদদের স্মৃতিতে শ্রীরামপুরে গঙ্গার নিশান ঘাটের পাশে ‘ভাষা বাগান’ রয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে প্রতি রবিবার সেখানে পশুপাখির হাট বসছে। এক রবিবার সেই হাটের ওই খাঁচাবন্দি কুকুরছানার ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। সে দিন তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। এ ভাবে পশুপাখি বিক্রির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকে।

হাট অন্যত্র সরানোর দাবিতে পুরপ্রধানের উদ্দেশে খোলা চিঠি সমাজমাধ্যমে ঘুরছে। ভাষা বাগানে ‘ভাষা দিবস’ পালন করে ‘আ মরি বাংলা ভাষা’ সংগঠন। তারাও দ্বিতীয়বার পুরপ্রধানকে চিঠি দিয়ে হাট সরানোর আর্জি জানিয়েছে। অনেকেরই বক্তব্য, প্রখর রোদে প্লাস্টিক-পলিথিনের ছাউনি দেওয়া খাঁচায় কুকুর-পাখি আটকে রাখা অনুচিত। প্রয়োজনে শহরের বাস স্ট্যান্ডে পড়ে থাকা ভবনে হাটসরানো হোক।

পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা বলেন, ‘‘হাট সরানোর দাবি যখন উঠেছে, আমরা আলোচনা করব। তবে, বহু মানুষ চান, ওখানে হাট বসুক। বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ পুর-পারিষদ তথা স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি (কাউন্সিলর) সন্তোষ সিংহ জানান, পশুপ্রেমী এক পুলিশ আধিকারিকের পরামর্শে হাটের উদ্যোগ। তিনি বলেন, ‘‘হাট পুরসভা চালাবে। প্রস্তাব পাস হয়েছে। হাট বসানোর খরচ তুলতে এখন নামমাত্র টাকা বিক্রেতাদের থেকে নেওয়া হচ্ছে। এর পরে পুরসভাই টাকার অঙ্ক ঠিক করেসংগ্রহ করবে।’’

গত রবিবার দেখা যায়, ভাষা বাগান, সামনের রাস্তা, মহকুমাশাসকের আবাস লাগোয়া ফুটপাথে কুকুর-পাখি-মাছ, তাদের খাবার, খাঁচা-সহ আনুষঙ্গিক নানা জিনিসের পসরা। মাত্র দু’একটি কুকুরের খাঁচার সামনে পাখা। বসার জন্য স্থানীয় এক যুবক ৫০-১০০ টাকা নিচ্ছেন বলে বিক্রেতারা জানান।

শুধু পশুপাখির কষ্ট নয়, ভাষা শহিদদের স্মৃতিতে পুরসভার তৈরি ভাষা বাগানে পশুপাখির হাটের যৌক্তিকতা প্রশ্ন তুলেছে ‘আ মরি বাংলা ভাষা’ সংগঠন। তারা এর আগে হাট সরানোর আর্জি জানালেও পুর-কর্তৃপক্ষ নাকচ করে দিয়েছিলেন। সংগঠনের সদস্যেরা এ বার পুরপ্রধানকে খোলা চিঠিতে জানিয়েছেন, হাট না সরালে এবং ওই উদ্যান ও শহিদ বেদির পবিত্রতা রক্ষায় পুরসভা উদ্যোগী না হলে,তাঁরা সেখানে শহিদ স্মরণে অনুষ্ঠান করবেন না।

পুরসভার দাবি, নিশান ঘাটের পাশে ডেনিস আমলে হাট বসত। পশুপাখির হাটের মাধ্যমে সেই ঐতিহ্য ফিরেছে। আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চাকারীদের একাংশের অবশ্য দাবি, সেই সময় জাহাজে শুকনো মশলাপাতি নিশান ঘাটে এলেও হাট সেখানে বসত না।

বিক্রেতাদের একাংশের বক্তব্য, হাটটি শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছে বসছে। পাশেই ফেরিঘাট। গঙ্গা পেরিয়ে ব্যারাকপুরের দিক থেকে অনেক ক্রেতা আসছেন। অন্যত্র এই সুবিধা অমিল।সন্তোষ জানান, নিশান ঘাটের অন্য পাশে মহকুমাশাসকের আবাসের উল্টো দিকে হাট সরানোরভাবনা রয়েছে। শহরবাসীর একাংশ অবশ্য চান, ‘হেরিটেজ় জ়োন’ঘোষণার দাবি ওঠা ওই চৌহদ্দি তো বটেই, খোলা আকাশের নীচে কোথাও যেন হাট না বসে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Serampore Serampore Municipality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy