Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
প্রতারণার অভিযোগে ধৃত ১, বাজেয়াপ্ত মোবাইল ও ল্যাপটপ
Scam

Scam: রেশন কার্ডে আধার সংযোগ করে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা গায়েব

ধৃতের মোবাইল ফোনে টাকা লেনদেনের দু’টি সফটওয়্যার পাওয়া গিয়েছে।

ধৃত সফিকুল ইসলাম।

ধৃত সফিকুল ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মগরা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১ ০৬:৩১
Share: Save:

রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর সংযোগ করাতে গিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা খোওয়া গেল। অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মী এবং দুই ছাত্রীর সঙ্গে এমনই প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে হুগলির মগরায়। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। শোরগোল পড়েছে সরকারি মহলেও। প্রতারণার অভিযোগে ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি সংস্থার এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সেখ সফিকুল ইসলাম।

প্রশাসন সূত্রের খবর, চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের দিগসুই-হোয়েরা পঞ্চায়েত এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ করা হচ্ছিল। সেখানেই ওই কাণ্ড ঘটে বলে অভিযোগ।

তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের ধারণা, সংযোগের সময় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে উপভোক্তাদের হাতের ছাপ নেওয়া হয়। তার মাধ্যমেই লেনদেনের সফটওয়্যারের সাহায্যে ওই তিন জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতের মোবাইল ফোনে টাকা লেনদেনের দু’টি সফটওয়্যার পাওয়া গিয়েছে। ফোনটি এবং একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, সফিকুলের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা থানার গড়বেতা গ্রামে। সেখানে একটি ব্যাঙ্কের কিয়স্কে সে কাজ করত। পরে এই সংস্থায় যোগ দেয়। হুগলি (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধৃত যেহেতু ব্যাঙ্কের কিয়স্কে কাজ করত, তাই ব্যাঙ্ক মারফত লেনদেনের বিষয় জানা ছিল। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই প্রতারণা কিনা, দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত কিনা, তদন্তে তাও দেখা হচ্ছে।’’

বিডিও (চুঁচুড়া-মগরা) প্রিয়াঙ্কা বালা বলেন, ‘‘জেলা স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আর কেউ প্রতারিত হয়েছেন কিনা, পঞ্চায়েত প্রধানকে দেখতে বলা হয়েছে।’’ প্রধান প্রদীপ রায় জানান, ঘটনার জেরে ওই পরিষেবা দু’দিন বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই কাজে নতুন লোক চেয়ে ব্লকে আবেদন করা হয়েছে।

প্রতারিতদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী ঈশানচন্দ্র কুমার জানান, রবিবার তিনি একটি শিবিরে রেশন কার্ডে আধার সংযোগ করান। রাতে তাঁর ছেলে মোবাইলের এসএমএস-এ দেখেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ হাজার টাকা উধাও। বিষয়টি তিনি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বীরেন্দ্রকুমার খাঁড়াকে জানান। তখনই বীরেন্দ্রবাবু কয়েক জন সহকর্মীকে নিয়ে পঞ্চায়েত ভবনে যান সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মীদের কাছে। তাঁর দাবি, জিজ্ঞাসা কর সফিকুল ইতস্তত করতে থাকেন। এর মধ্যেই কল্পনা মণ্ডল ও সুদীপা মালিক নামে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া দুই তরুণী এসে জানায়, তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকেও পাঁচ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। ওই টাকা তাঁরা কন্যাশ্রী প্রকল্পে পেয়েছিল। তিন জনই সোমবার মগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই রাতে সফিকুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

সুদীপার বাবা দিনমজুর। সে জানায়, শনিবার সকালে সে একটি শিবিরে গিয়ে রেশন কার্ডের সঙ্গে সাথে আধার লিঙ্ক করায়। সোমবার ব্যাঙ্কে গিয়ে বুঝতে পারে, পাঁচ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

হুগলি জেলায় রেশন কার্ডে আধার নম্বর সংযোগের বরাত পেয়েছে ‘যুব ইনফো সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা। তার সুপারভাইজার নীতিশ সমাদ্দার জানান, জেলায় প্রায় ৬০০ জন এই কাজ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে সংযোগের কাজ করেছি। এতে যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে টাকা আত্মসাৎ হওয়ার কথা নয়। কী ভাবে এমন ঘটল, বলতে পারব না। অভিযুক্তকে পুলিশ ধরেছে। তদন্তে সব জানা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

aadhaar card Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE