E-Paper

চিকিৎসকের অভাবে ভুগছে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকার কথা মেনে নিয়েছেন। হাসপাতালের এক কর্তার বক্তব্য, মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হওয়ার পরে মানুষ উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা প্রত্যাশা করছেন।

নরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৮
শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —ফাইল চিত্র।

বছর দু’য়েক আগে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিণত হয় শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চালু হয় পঠনপাঠনও। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা এখনও সেই তিমিরেই থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। হাসপাতালে না আছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, না নেফ্রোলজিস্ট, না ইউরোলজিস্ট, না নিউরোলজিস্ট। সাধারণ চিকিৎসকের অভাবও আছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকার কথা মেনে নিয়েছেন। হাসপাতালের এক কর্তার বক্তব্য, মেডিক্যাল কলেজে উন্নীত হওয়ার পরে মানুষ উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা প্রত্যাশা করছেন। রোগীর ভিড় বেড়েছে। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজের মানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখানে সেটা করা যাচ্ছে না।

উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক তথা এই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি নির্মল মাজি বলেন, ‘‘চিকিৎসকের অভাবের কথা স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিভাগকে জানানো হয়েছে। আসলে রাজ্যে অনেকগুলি মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়েছে। প্রথম প্রথম তাই সমস্যা হচ্ছে। সব মিটে যাবে।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে এই কলেজ হাসপাতালে পঠনপাঠন চালু হয়। এখন চলছে দ্বিতীয় বর্ষ। পঠনপাঠনের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় এখানে ওই বিভাগটি সাধারণ চিকিৎসকদের দিয়েই চালানো হচ্ছে। গুরুতর কিছু হলে রোগীকে ‘রেফার’ করা হচ্ছে কলকাতার হাসপাতালে।

হাসপাতালে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলে ডায়ালিসিস ইউনিটটি চালানো হয়। এখানেও রোগীর চাপ কম নয়। হাসপাতালে নেফ্রোলজিস্ট না-থাকায় ওই বেসরকারি সংস্থাই সপ্তাহে একদিন করে একজন নেফ্রোলজিস্টকে আনে। রোগীদের পরিজনদের অভিযোগ, সাধারণ চিকিৎসকের অভাবে মূলত জরুরি বিভাগে সমস্যা দেখা দেয়।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, ঘাটতি মেটাতে অস্থায়ী ভাবে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক যে সব স্নাতকোত্তর (এমডি) চিকিৎসক এখানে আসেন, তাঁদেরও জরুরি বিভাগে বসানো হয়। কাছেই জাতীয় সড়ক হওয়ায় ওই বিভাগে প্রায়ই দুর্ঘটনায় জখমদের আনা হয়। তাঁদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পুলিশে রিপোর্ট করতে হয়। এই রিপোর্ট দেওয়ার সময়ে সংস্লিষ্ট চিকিৎকদের অনেক ভূমিকা থাকে। কারণ, এই ধরনের ঘটনায় বহু ক্ষেত্রে মামলা হয়।

কিন্তু অনেকেরই অভিযোগ, জরুরি বিভাগের চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসকদের একাংশ মামলা এড়ানোর জন্য দুর্ঘটনাগ্রস্তদের প্রাথমিক চিকিৎসা করেই ‘রেফার’ করে দেন বা প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সেই রোগীর ক্ষেত্রে কী করণীয় তা জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তাতে ওই আহতের মূল চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়ে যায়।

হাসপাতালের এক চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘‘আমরা অস্থায়ী ভাবে এসেছি। মামলার ফাঁদে পড়তে হয়, এমন ঝুঁকি নেব কেন?’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, চিকিৎসকের সংখ্যা না বাড়ানো হলে এই সমস্যা মিটবে না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

medical college

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy