Advertisement
E-Paper

Probe: শশীকান্তের মৃত্যু-রহস্য বুঝতে ফেলা হল পুতুল

শশীকান্তের পরিবারের অভিযোগ, মদ খাইয়ে কেয়াই তাঁকে বারান্দা থেকে ঠেলে ফেলে খুন করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৩
শশীকান্তের মৃত্যু-রহস্যের তদন্তে ঘটনার পুনর্নির্মাণ পুলিশের ।

শশীকান্তের মৃত্যু-রহস্যের তদন্তে ঘটনার পুনর্নির্মাণ পুলিশের । ছবি: সুব্রত জানা

চারতলার বারান্দা থেকে কেউ ঝাঁপ দিলে তাঁর দেহের অবস্থান কেমন হতে পারে? যদি তাঁকে ধাক্কা মারা হয়, তা হলে?

হাওড়ার আলমপুরের একটি পানশালার গায়ক শশীকান্ত মালিকের মৃত্যু-রহস্য ভেদ করতে শুক্রবার সকালে তাঁর প্রেমিকা, ধৃত কেয়া সরকারকে নিয়ে বাউড়িয়ার বুড়িখালিতে যুগলের চারতলার ফ্ল্যাটে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। আনা হয়েছিল একটি পুতুলও। পুতুলটিকে দু’ভাবে ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে ফেলে আসল ঘটনা আঁচ করার চেষ্টা করেন তদন্তকারীরা।

কেয়ার দাবি, শশীকান্ত ওই বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু শশীকান্তের পরিবারের অভিযোগ, মদ খাইয়ে কেয়াই তাঁকে বারান্দা থেকে ঠেলে ফেলে খুন করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ কেয়াকে গ্রেফতার করে।

এ দিন ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়ার এসডিপিও রাঘব এস এবং বাউড়িয়া থানার ওসি সুমন্ত দাস। ঘটনাস্থল ও ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে পুলিশ বেশ কিছু নমুনাও সংগ্রহ করে। পাশাপাশি, ঘটনার দিন ঠিক কী হয়েছিল, তা বুঝতে ওই বারান্দায় নিয়ে যাওয়া হয় কেয়াকে। কেয়া পুলিশকে দেখান, কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছিল। বারান্দার রেলিংয়ের কাচ ভাঙা অবস্থায় ছিল। সেই ভাঙা কাচে তাঁর পা কেটে গিয়েছিল বলে কেয়া পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জেরাও করা হয়।

এক তদন্তকারী অফিসার জানান, কেয়া এবং শশীকান্ত যে সব জায়গায় কাজ করতেন, সেই সব জায়গাতেও তদন্ত চালানো হবে। তাঁদের পুরনো গতিবিধিরও খোঁজখবর করা হবে। কেয়ার সঙ্গে আরও কোনও পুরুষের বন্ধুত্ব ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হবে। এ দিন কেয়াকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

 স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ। শুক্রবার।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ। শুক্রবার।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে বুড়িখালির ওই বহুতলের সামনে থেকে শশীকান্ত মালিকের দেহ মেলে। তাঁর বাড়ি হাওড়ার রাজাপুরের পশ্চিমপাড়ায়। তিনি বিবাহিত। দু’টি সন্তান আছে। যে পানশালায় তিনি গান গাইতেন, সেথানেই নাচতেন কেয়া। তিনিও বিবাহিত। একই জায়গায় কাজের সূত্রে বছর দুয়েক আগে দু’জনের আলাপ। তাঁদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে দু’জনের সংসারেই অশান্তি লাগে। গত এক বছর ধরে দু’জনে বিভিন্ন জায়গায় থাকছিলেন। দু’মাস আগে বাউড়িয়ার ওই বহুতলে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন শশীকান্ত। বেশির ভাগ সময় কেয়ার সঙ্গে তিনি সেখানেই থাকতেন। বছরখানেক আগে স্বামী-সংসার ছেড়ে ১১ বছরের মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন কেয়া। তাঁর শ্বশুরবাড়ি চুঁচুড়ায়।

কেয়া দাবি করেছিলেন, তিনি জানতেন না শশীকান্ত বিবাহিত। জানার পর থেকে শশীকান্তকে এড়িয়ে চলতেন। তা সত্ত্বেও শশীকান্ত তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য জোর করতেন। বুধবার রাতে তিনি মদ্যপ অবস্থায় এসেছিলেন। একসঙ্গে থাকার জন্য জোর করতে থাকেন। তিনি আপত্তি করায় বিবাদ শুরু হয় এবং শশীকান্ত আচমকা ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন বলে কেয়ার দাবি।

পড়শিরা জানান, ওই দু’জনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত।প্রতিদিন দুপুরের পর দামি গাড়িতে দু’জনে বেরিয়ে যেতেন। গভীর রাতে ফিরতেন।

Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy