E-Paper

হাওড়ার সব ঘাটে কয়েক দিন বন্ধ লঞ্চ পরিষেবা, প্রবল ভোগান্তির আশঙ্কা

সমিতি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পরিষেবা বন্ধ থাকবে ২৪ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু ২৫ তারিখ থেকেই যে পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এমন আশ্বাস দিতে পারেননি সংস্থার কর্তারাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:২৫
An Image Of Launch Service

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রায় বেনজির এক সিদ্ধান্তের জেরে আজ, মঙ্গলবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত হাওড়ার সমস্ত ঘাটে লঞ্চ পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রাখতে চলেছে ‘হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি’। ওই সংস্থা বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্যই
নাকি তাদের সমস্ত লঞ্চ এক ধাক্কায় বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে আজ থেকে আগামী কয়েক দিন হাওড়া জুড়ে প্রবল দুর্ভোগের মধ্যে পড়বেন কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী। প্রশ্ন উঠেছে, এই ভোগান্তির দায় কার? কেনই বা সমিতি বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করতে পারেনি? সব জেনেও কেন নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে ছিল প্রশাসন?

সমিতি সূত্রের খবর, তাদের মোট ১১টির মধ্যে পাঁচটি লঞ্চের ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে সোমবার। আজ, মঙ্গলবার আরও দু’টির মেয়াদ শেষ হবে। তখন হাতে থাকবে মাত্র চারটি লঞ্চ। সব ক’টিই লজ্‌ঝড়ে। সেই চারটি লঞ্চ দিয়ে যে হেতু
হাওড়ার সমস্ত ঘাটে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে না, তাই সব ক’টি লঞ্চই বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়ে আগে থেকে জেনেও সমিতি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন? সমিতির কর্তাদের বক্তব্য, তাঁরা অসংখ্য বার জানানোর পরে অবশেষে প্রশাসন নতুন ১৫টি লঞ্চ দিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু সেই লঞ্চগুলি এখনও পরিষেবা শুরু করেনি। সেগুলির আসতে কিছু দিন সময় লাগবে। তাই আপাতত পরিষেবা বন্ধ রাখছেন তাঁরা। নিত্যযাত্রীদের একটি বড় অংশ এই খবরে প্রবল ক্ষুব্ধ। তাঁদের অনেকেই লঞ্চে গঙ্গা পেরিয়ে কলকাতায় কাজে আসেন বা হাওড়ায় কাজে যান। এই পরিস্থিতিতে প্রবল ভোগান্তির মধ্যে পড়বেন তাঁদের অনেকেই। সমিতি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পরিষেবা বন্ধ থাকবে ২৪ তারিখ পর্যন্ত। কিন্তু ২৫ তারিখ থেকেই যে পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এমন আশ্বাস দিতে পারেননি সংস্থার কর্তারাও। তাঁরাও এখনও বিষয়টি সম্পর্কে ধোঁয়াশায় রয়েছেন।

সমিতি জানিয়েছে, ‘জলধারা’ প্রকল্পের আওতায় ১৫টি নতুন লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এর ফলে হাওড়ার বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রতিদিন যে কয়েক হাজার যাত্রী লঞ্চে গঙ্গা পারাপার করেন, তাঁরা উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তাও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এ মাসের শেষে বা নতুন বছরের প্রথম দিকে নতুন লঞ্চগুলি যাত্রী পরিবহণের কাজ শুরু করবে বলে খবর। ‘হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি’ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার বিভিন্ন লঞ্চঘাট থেকে যাত্রী পরিবহণের জন্য এত দিন ১১টি নিজস্ব লঞ্চ চালানো হচ্ছিল। কিন্তু অর্থাভাবে দীর্ঘদিন কোনও রকম মেরামত‌ি না হওয়ায় অধিকাংশ লঞ্চই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছিল। ফিটনেস সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য লঞ্চগুলিকে ‘ড্রাই ডক’ করে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়নি। এর মধ্যে ১৮ ডিসেম্বর, সোমবার, পাঁচটি লঞ্চের ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেগুলি যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে না। আজ, মঙ্গলবার আরও দু’টি লঞ্চের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১১টির মধ্যে সাতটি লঞ্চ সম্পূর্ণ বসে যাবে। সমিতির এক পদস্থ কর্তা জানান, রাজ্য সরকারকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানোয় পরিবহণ দফতর ও সমবায় দফতরের পক্ষ থেকে নতুন ১৫টি লঞ্চ চালানোর বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ওই পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘হাওড়া, বাউড়িয়া, নাজিরগঞ্জের মতো ফেরিঘাট থেকে এই নতুন লঞ্চগুলি চলবে। নতুন লঞ্চগুলি কাঠের বদলে লোহার তৈরি। ৬০, ৮০ বা ১০০ জন পর্যন্ত যাত্রী নিতে পারবে।’’

সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই নতুন লঞ্চগুলির সর্বোচ্চ গতি পাঁচ নটিক্যাল মাইল কিংবা নয় নটিক্যাল মাইল। নতুন লঞ্চ চালু হলেও ভাড়া আগের মতো ছ’টাকাই থাকছে। তবে, ওই নতুন লঞ্চগুলি সমিতির কর্মীরাই চালাবেন, না রাজ্য পরিবহণ দফতর নিজেদের কর্মীদের দিয়ে চালাবে, তা এখনও জানা যায়নি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Launch Service Ferry Ghats Howrah Service Disrupted

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy