E-Paper

বিড়ম্বনায় দল, সুজয়ের আকস্মিক ইস্তফার কারণ ঘিরে প্রশ্ন উঠল অন্দরেই

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যত দিন না পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হচ্ছে, তত দিন পুরসভার দৈনন্দিন কাজকর্ম যাতে ব্যাহত না হয়, তার জন্য সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন চেয়ারপার্সন।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৩৪
সুজয় চক্রবর্তী।

সুজয় চক্রবর্তী। — নিজস্ব চিত্র।

প্রশাসকমণ্ডলীর দুই শীর্ষ কর্তার পরপর ইস্তফার জেরে হাওড়া পুরসভায় কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই সোমবারই তৎপর হয়েছেন পুর কমিশনার বন্দনা পোখরিয়াল। প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তীর ইস্তফা গৃহীত হয়েছে কিনা, তা তাঁর ইস্তফা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরেও পরিষ্কার হয়নি। তাই প্রশাসনিক কাজকর্ম চালানোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে এ দিন বিকেলে পুরসভার বাইরে পুর কমিশনার পদত্যাগী চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।

সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যত দিন না পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হচ্ছে, তত দিন পুরসভার দৈনন্দিন কাজকর্ম যাতে ব্যাহত না হয়, তার জন্য সমস্ত রকম সহযোগিতাকরবেন চেয়ার পার্সন। তবে, আজ, মঙ্গলবারের মধ্যেই পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এ বিষয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিকে, আচমকা পুর চেয়ারপার্সনের ইস্তফা ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে অন্তর্দ্বন্দ্বের যে ঝড় উঠেছে, তা সামাল দিতে গিয়ে সোমবার দিনভর জেলা নেতৃত্বের কালঘাম ছুটে গিয়েছে।

গত রবিবার রাতে প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন তাঁর ইস্তফা দেওয়ারকথা ঘোষণা করেন। এর কয়েক দিন আগেই তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ডেপুটি চেয়ারপার্সন সৈকত চৌধুরী। পরপর এই দুই পদস্থ কর্তার ইস্তফা ঘিরে হাওড়া জেলা তৃণমূলেশোরগোল পড়ে যায়। দলের নির্দেশেই সৈকত ইস্তফা দেন। তা নিয়ে আলোড়ন থিতু হতে না হতেই সুজয় ইস্তফা দেওয়ায় হতবাক অনেকেই।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সাড়ে চার বছর আগে সুজয় হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন হওয়ার পরেই দলের একটি বড় অংশের বিরাগভাজন হয়েছিলেন, কারণ তিনি দলীয় রাজনীতির মূল স্রোতে ছিলেন না। এ জন্য গত সাড়ে চার বছরে বার বার নানা কাজে বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।

অথচ, দলীয় সূত্রের খবর, হাওড়া শহরের বিশিষ্ট শিশুরোগ চিকিৎসককে মুখ্যমন্ত্রী নিজের ইচ্ছেতেই ওই পদে বহাল করেছিলেন। বছর দেড়েক আগেও এক বার সুজয় ইস্তফা দিয়েছিলেন। সে বার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাগৃহীত হয়নি।

তবে, তাঁর এই আচমকা সিদ্ধান্তে দল যে রীতিমতো বিব্রত, তা এ দিন বোঝা গিয়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম চৌধুরীর কথায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি জানতাম না যে, ডাক্তারবাবু ইস্তফা দিয়েছেন।কেন দিয়েছেন, তা-ও জানি না। আমি আজ ওঁকে দু’বার ফোনকরেছিলাম। জেলা সভাপতি হিসাবে জানতে চেয়েছি, কেন এ কাজ করলেন? কেন আমাকে আগে জানালেন না?’’ জেলা সভাপতির বক্তব্য, সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সে কথা ভেবে দলকে না জানিয়ে এ কাজ করা ঠিক হয়নি।

এ দিন এ বিষয়ে পদত্যাগী চেয়ারপার্সন সুজয়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার হয়তো জেলা সভাপতিকে জানানো হয়নি। কিন্তু আমি দলের উচ্চ স্তরের নেতাকে জানিয়ে এই পদত্যাগ করেছি। এটাও জানিয়েছি যে, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণে এই পদত্যাগ।’’

এ দিকে, এ দিনই ছটপুজো থাকায় হাওড়ার ছ’টি গঙ্গার ঘাট পরিষ্কার করা থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখাশোনা, সবই করার কথা ছিল পুরসভার। ওই বন্দোবস্ত নিয়ে সকাল থেকেই পুরভবনে দফতরের অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুর কমিশনার। এর পরে বিকেলে পদত্যাগী চেয়ারপার্সনের সঙ্গেও একান্ত বৈঠকে মিলিত হন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah Municipaity TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy