বেতন বাড়ানো-সহ নানা দাবিতে শুক্রবার থেকে কর্মবিরতি চলছে আশাকর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে আজ, রবিবার পালস পোলিয়ো কর্মসূচি সুষ্ঠু ভাবে পালনের জন্য হাওড়ায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেশি করে কাজে লাগাতে চেয়েছিল প্রশাসন। তাঁদের প্রশিক্ষণের কথাও ভাবা হচ্ছিল। তবে, ওই কাজে তাঁরা রাজি নন জানিয়ে শনিবার হাওড়ার একাধিক ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। দেওয়া হল স্মারকলিপি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই জেলায় পালস পোলিয়ো টিকাকরণে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার আশাকর্মীর পাশাপাশি সহায়তা করেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও। তাঁরা ওই কাজে অসম্মত হওয়ায় রবিবারের কর্মসূচি পালনে সমস্যা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের আশঙ্কা। যদিও আশা বা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ওই কাজ না করলেও কোনও সমস্যা হবে না বলে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশলয় দত্ত বলেন, ‘‘ওই কর্মসূচি জেলায় সুষ্ঠু ভাবেই হবে। আমরা একদিকে যেমন আশাকর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, তেমনই বিকল্প ব্যাবস্থাও রাখা হয়েছে, যাতে কোনও সমস্যা না হয়।’’
এ দিন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিক্ষোভ হয় সাঁকরাইল ও ডোমজুড় ব্লকে। সাঁকরাইলের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অপরাজিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘আশাকর্মীদের কর্মবিরতির জন্য পালস পোলিয়ো টিকাকরণের কাজ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে জোর করে করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। আমরা তা করতে রাজি নই।’’ অন্য এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রাখি মান্নার বক্তব্য, পালস পোলিয়োর কাজে যে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়, তা খুবই কম। অনেক ক্ষেত্রে যাতায়াতে তার থেকে বেশি খরচ হয়ে যায়।
আশাকর্মীদের অনুপস্থিতিতে পালস পোলিয়োর মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি যাতে নির্বিঘ্নে হয়, সে জন্য হুগলিতে স্বাস্থ্য দফতরকে নানা আয়োজন করতে হচ্ছে। একাধিক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, বিভিন্ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এএনএম পদের স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই টিকাকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই কাজ জানা অন্য কিছু স্বাস্থ্যকর্মীকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। তাতেও যে কম লোকবল নিয়েই ওই কাজ সামলাতে হবে,
তাঁরা মানছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি কর অবশ্য বলেন, ‘‘আশাকর্মী না থাকলে কাজকর্মে কিছু সমস্যা হলেও পোলিয়ো টিকাকরণে কোনও অসুবিধা হবে না। অতীতে যখন আশাকর্মীরা ছিলেন না, তখনও টিকাকরণ হয়েছে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বুথপিছু (দু’হাজার জনসংখ্যার) একটি শিবির করে টিকাকরণ চলবে। শিবিরে কেউ আসতে না পারলে পরের তিন দিন ধরে বাড়িতে গিয়ে টিকা খাওয়ানো হবে।
আশাকর্মী সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য আবিদা বেগম বলেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকে আমাদের ভাতা বৃদ্ধি হয়নি। মোবাইল
ফোন-সহ একাধিক দাবি না মেটা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।’’ হুগলির ১৮টি ব্লকে আশাকর্মীর মোট সংখ্যা ২৮৪১ জন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)