Advertisement
E-Paper

Dam: বাঁধ সংস্কারের ধরন নিয়ে প্রশ্ন গ্রামবাসীর

এ দিন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা উদয়নারায়ণপুরের বকপোতার কাছে গিয়ে সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৩
উদয়নারায়ণপুরে বাঁধ সংস্কারের কাজ পরিদর্শনে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি।

উদয়নারায়ণপুরে বাঁধ সংস্কারের কাজ পরিদর্শনে বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি। নিজস্ব চিত্র।

বন্যার হাত থেকে হাওড়ার উদয়‌নারায়ণপুর এবং আমতা-২ ব্ল‌ককে পাকাপাকি ভাবে বাঁচাতে বিশ্বব্যাঙ্ক প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন নদী বাঁধ সংস্কার করছে। বৃহস্পতিবার সংস্কার কাজ পরিদর্শন করতে উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় এসেছিল বিধানসভার ‘সেচ সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি’। ওই প্রকল্পের ফলে উদয়নারায়ণপুরের বন্যা কতটা রোধ করা যাবে, তা নিয়ে কমিটির কাছে প্রশ্ন তুলে দিলেন এলাকার বাসিন্দারা।

প্রশ্নের যে যৌক্তিকতা রয়েছে, সেটা মেনে নিয়ে পরিদর্শন শেষে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় উদয়নারায়ণপুরে দামোদরের বাঁধ সংস্কার হচ্ছে ঠিকই। তবে বাসিন্দারা যা বলেছেন, আমাদের মনে হয়েছে তাঁদের বক্তব্যে যুক্তি আছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য সম্বলিত আমাদের সুপারিশ সেচমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উদয়নারায়ণপুরে দামোদরের পূর্ব দিকের বাঁধ বেশ উঁচু এবং প্রতি বছর সেচ দফতর তা নিয়ম করে সংস্কার করে। অথচ দামোদরের পশ্চিম দিকের সম্বল হল সাবেক জমিদারি বাঁধ। এই বাঁধ বেশ নিচু। সেচ দফতরের বক্তব্য, দামোদরের পূর্ব দিকে পড়ে শহর এলাকা। তাই শহর এ‌লাকাকে রক্ষা করার জন্য এই দিকের বাঁধ উঁচু করা হয়েছে এবং তা সংস্কার করা হয়। পশ্চিম দিক যেহেতু গ্রামীণ এলাকা তাই এই দিকে নতুন করে বাঁধ দেওয়া হয়নি। অথচ উদয়নারায়ণপুর ব্লকের ৮০ শতাংশই পড়ে দামোদরের পশ্চিম দিকেই। এই অবস্থায় ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপরে জল ছাড়লেই এই ব্লক ভেসে যায়।

বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় যে সংস্কার কাজ হচ্ছে তাতেও দামোদরের পূর্ব দিকের বাঁধকেই আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। পশ্চিম দিকের জমিদারি বাঁধগুলি শুধু বাঁধানো হচ্ছে, উঁচু করা হয়নি। বাসিন্দাদের বক্তব্য, দামোদরের পশ্চিম দিকের বাঁধ যদি উঁচু না করা হয় তাহলে ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপরে জল ছাড়লে তাঁরা থেকে যাবেন সেই তিমিরেই। বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় সেচ দফতরের এই সংস্কার কাজের কোনও সুফল তাঁরা পাবেন না।

এ দিন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা উদয়নারায়ণপুরের বকপোতার কাছে গিয়ে সংস্কার কাজ পরিদর্শন করেন। সেই সময়েই তাঁদের কাছে বাসিন্দারা দামোদরের পশ্চিম দিকের বাঁধ উঁচু করার দাবি জানান। পরিদর্শন শেষে তাঁত হাটে সেচ দফতর এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা। সেখানে হাজির ছিলেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজাও। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সুর মেলান তিনিও।

বৈঠক শেষে বিধায়ক বলেন, ‘‘একটা সময় উদয়নারায়ণপুর একেবারেই গ্রামীণ এলাকা ছিল। কিন্তু এখন উদয়নারায়ণপুরে উন্নয়ন হয়েছে। শিল্প বাণিজ্য বেড়েছে। এই অবস্থায় দামোদরের পশ্চিম দিকের বাঁধকেও যদি উঁচু করা না হয় তাহলে বন্যার কারণে যে বিপুল ক্ষতি হবে তা এড়ানো যাবে না।’’

স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতির কথায়, ‘‘সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, বাঁধ নির্মাণের নীতি অনুযায়ী নদীর দুই দিকের বাঁধ একইভাবে উঁচু করা যায় না। তবুও এলাকার বাসিন্দাদের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তাঁদেরও যুক্তি রয়েছে। সেক্ষেত্রে পূর্ব দিকের বাঁধের মতো না হলেও পশ্চিম দিকের বাঁধ কিছুটা হলেও উঁচু করা প্রয়োজন। আমরা এই সুপারিশই করব।’’

এ দিন আমতা ১ এবং ২ ব্লকেও পরিদর্শনে আসে কমিটি। সেখানে তারা উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজি এবং আমতার বিধায়ক সুকান্ত পালের সাথে কথা বলে। কথা হয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও। পরে কমিটির সদস্যরা জানান, উদয়নারায়ণপুরে বন্যা হলে সেই জল ভাসিয়ে দেয় আমতা-২ ব্লককে। এই ব্লকের জল দ্রুত নিকাশির জন্য দুই বিধায়ক ও বাসিন্দারা দাবি জানিয়েছেন।

এ দিন কমিটির পরিদর্শন কর্মসূচিতে ডাকা হয়নি এই এল‌াকার বন্যা প্রতিরোধ নিয়ে বারবার যিনি সোচ্চার হয়েছেন, আমতার সেই প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রকে। তিনি বলেন, ‘‘দামোদরের পশ্চিম দিকের বাঁধ উঁচু করা এবং আমতা-২ ব্লকের নিকাশি খালগুলির ব্যাপক সংস্কার না হলে এই দু’টি ব্লককে পাকাপাকি ভাবে বন্যার হাত থেকে বাঁচানো যাবে না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy