গণভবনের অনুষ্ঠানে চে গেভারার কন্যা আলেইদা। ছবি: দীপঙ্কর দে
তিনি এলেন। গানের সুরে গলা মেলালেন। আর মানুষের কাছে বার্তা দিলেন জুড়ে থাকার।
শনিবার সকালে উত্তরপাড়ার গণভবনের দর্শকরা মজে রইলেন চে গেভারার কন্যা, কিউবাবাসী চিকিৎসক আলেইদা এস্তেফানিয়া গেভারার উপস্থিতিতে। এই অনুষ্ঠানে এসে যে তিনিও অভিভূত, জানালেন আলেইদা। ফের এই শহরে আসার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
এ দিন সারা ভারত বিশ্ব শান্তি ও সংহতি সংস্থা-সহ বিভিন্ন বাম গণ-সংগঠনের উদ্যোগে লোকনৃত্য আর শোভাযাত্রার মাধ্যমে বালিখাল থেকে আলেইদাকে প্রেক্ষাগৃহে আনা হয়। হুগলি জেলা আইপিটিএ-র সদস্যরা লাতিন আমেরিকার মুক্তি সংগ্রামের উপর একটি সমবেত গণসঙ্গীত গান। তাতে গলা মেলান চে-কন্যা। দোভাষীর মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘এই শহর ভালবাসার শহর। কিউবার প্রতি এখানকার মানুষের একটা বিশেষ অনুভূতি কাজ করে। এখানের মানুষের ঢল আর ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। এখানে এলে মনে হয়, আমার বাবা আজও জীবিত রয়েছেন।’’
কিউবার সঙ্কট প্রসঙ্গে চে-কন্যা বলেন, ‘‘কোভিড আর অর্থনৈতিক অবরোধের মধ্যে দিয়ে আমাদের দেশ চলেছে। মানুষের কাছে এখন ওষুধ পৌঁছনো দরকার। কিন্তু আমেরিকা অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করে সেই কাজে বাধা দিচ্ছে। ভারতের কেরলের সঙ্গে কিউবা যোগাযোগ রেখে ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা কাটানোর চেষ্টা করছে। দেশে দেশে সংহতির থেকেও এখন জনগণের মধ্যে ঐক্য জরুরি। ধর্মীয় আর নারী-পুরুষের ভেদাভেদ দূর করতে হবে। সবাই এক হলে লড়াই সহজ হবে।’’
এরই মাঝে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে একটি ওড়না চেয়ে মঞ্চে উপস্থিত দুই অতিথিকে সেটির দু’টি খুঁট টানতে বলেন আলেইদা। তারপর বলেন, ‘‘দেখুন, ওঁরা টানাটানি করছেন। কিন্তু ধরে আছেন বলেই মাঝে তৃতীয় কেউ আসতে পারছেন না। আমাদেরও জোট বেঁধে থাকতে হবে।’’ একটি গান গেয়ে বক্তব্য শেষ করেন আলেইদা।
কিউবার মতো একটি ছোট দেশ নানা আর্থিক ও বাণিজ্যিক অবরোধের মধ্যে থেকেও কী ভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে এ দিন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন আয়োজন সংস্থার সভাপতি পল্লব সেনগুপ্ত। উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বাম বিধায়ক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ একে একে বিভিন্ন সংস্থাকে মঞ্চে ডেকে নেন চে-কন্যাকে শুভেচ্ছা ও সম্মান জানানোর জন্য।
মেয়ে এস্তেফানিয়া মাচিন গেভারাকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার কলকাতায় পা দিয়েই আইএসআই-এ গিয়েছিলেন আলেইদা। তার পরে বরাহনগরের টবিন রোডের মোড়ে এআইপিএসও-র উদ্যোগে তাঁদের সংবর্ধনার আয়োজন ছিল। বিকেলে তাঁরা গিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটারে। শনিবার উত্তরপাড়ার অনুষ্ঠানে অবশ্য মায়ের সঙ্গে আসেননি এস্তেফানিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy