সমবায়ের জন্মের ৬৩ বছর পর প্রথম নির্বাচন! সেই ভোটে বামেদের হারিয়ে সব ক’টি আসনেই জিতল তৃণমূল। ফলাফল ৫৬-০। রবিবার এমনই চিত্র দেখা গেল কোন্নগরের সমবায় ভোটে।
আজ থেকে ৬৩ বছর আগে কোন্নগর নবগ্রাম সমবায় ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তার পর থেকে এই সমবায়ে কখনও নির্বাচন হয়নি। আড়াই হাজারের বেশি সদস্য ভোটার রয়েছেন এই সমবায়ে। রবিবার সেখানে প্রথম বার নির্বাচন হয়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচনকে ঘিরে সকাল থেকে ছিল টানটান উত্তেজনা। বেলা ১২টা নাগাদ ৫৬ টি আসনের জন্য ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ হয় নবগ্রামের তিনটি স্কুলে। বামেরা সব আসনে প্রার্থী দিলেও বিজেপি একটিও আসনে প্রার্থী দেয়নি। ভোটগ্রহণ শেষে বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ শুরু হয় গণনা। প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। ফল ঘোষণা হতে দেখা যায়, সব আসনেই জিতেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন:
জয়ের চিত্রটা স্পষ্ট হতেই সবুজ আবির খেলা শুরু হয়ে যায়। তৃণমূল সমর্থকেরা একে অন্যকে আবির মাখিয়ে জয় উদ্যাপন করতে শুরু করে দেন। অন্য দিকে, ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে রাস্তা অবরোধ করেন বামেরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ বিষয়ে এসএফআই হুগলি জেলা কমিটির সম্পাদক অর্ণব দাস বলেন, ‘‘নবগ্রাম সমবায় ব্যাঙ্ক নির্বাচনে তৃণমূল সকাল থেকে দাদাগিরি-মস্তানি করেছে। নবগ্রামের সাধারণ মানুষ, যাঁরা ভোট দিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের উপর নৃশংস আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। ভোটদানের অধিকার থেকেও তাঁদের বঞ্চিত করেছে। সমবায় নির্বাচনের নামে যে প্রহসন চলল, তা আদতে তৃণমূলের লজ্জা। এতে সবুজ আবির মেখে উল্লাসের কোনও কারণ নেই।’’
অন্য দিকে, নবগ্রামে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৬৩ বছর আগে এই ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অথচ এত বছর ধরে এই ব্যাঙ্কে কোনও নির্বাচন হয়নি। তৃণমূল প্রথম নির্বাচন করাল। ৫৬টি আসনের মধ্যে ৫৬টিতেই আমরা জয়ী হয়েছি। সিপিএম নানা মিথ্যা অভিযোগ আনার চেষ্টা করছে। ওরা বাইরে থেকে লোকজনও নিয়ে এসেছিল। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় তারা কিছু করতে পারেনি। লোক দেখানোর জন্য ওরা রাস্তা অবরোধ করেছিল। কিন্তু ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনই আপাতত শাসক দলের ‘পাখির চোখ’। তার আগে কোন্নগরে এই জয়কে ইতিবাচক হিসাবেই দেখছে তৃণমূল।