Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩

১৬ থেকে ১৯ টাকা দরে বিকোচ্ছে জ্যোতি আলু

মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি আলুর দর বেঁধে দিলেও ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপ মহকুমার বড় বড় বাজারগুলিতে তা বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৯টাকা কিলো দরে। জেলায় এনফোর্সমেন্ট শাখা কিছুটা নজরদারি চালালেও প্রশাসন প্রায় নীরব দর্শক। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে ক্রেতাদের মধ্যে।

শান্তশ্রী মজুমদার
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০০:৪৫
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি আলুর দর বেঁধে দিলেও ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপ মহকুমার বড় বড় বাজারগুলিতে তা বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৯টাকা কিলো দরে। জেলায় এনফোর্সমেন্ট শাখা কিছুটা নজরদারি চালালেও প্রশাসন প্রায় নীরব দর্শক। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে ক্রেতাদের মধ্যে।

Advertisement

গত ২৩ জুন জ্যোতি আলুর বাজারদর ১৪টাকা বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হিমঘরের গেট থেকে তা ১২টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। আলু কিনতে গিয়ে পকেট পুড়ছে সাধারণ মানুষের। ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারের আলু ব্যবসায়ী স্বপন গায়েন বলেন, “পাইকারদের কাছে ১৫ টাকা বা কখনও তারও বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। কম করে ১৬ থেকে ১৭ টাকা কিলো দরে বিক্রি না করলে আমার চলবে কী করে?”

কাকদ্বীপ বাসন্তী ময়দান মার্কেটের আলু ব্যবসায়ী বাপ্পা দাসেরও একই অভিযোগ।

৫০ কেজির বস্তা থেকে বাছাই করে চার রকমের আলু বিক্রি হচ্ছে দুই মহকুমার বিভিন্ন বাজারে। ১৬ টাকা থেকে শুরু করে ১৯ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে আলুর।

Advertisement

কেন ১৪টাকায় বিক্রি করা যাচ্ছে না আলু?

ডায়মন্ড হারবারের আলুর বড় পাইকার গোরাচাঁদ পুরকাইত বলেনস “এক দিকে সরকারি ফরমান, অন্য দিকে হিমঘরের গেটে বাজারদর চড়া। এ বার কম দরে না পেলে আলু তোলাই বন্ধ করে দিতে হবে।” দিনে অন্তত ১০০ বস্তা আলু বিক্রি করেন গোরাচাঁদবাবু। তাঁর দাবি, ১৪টাকার বেশি দরে আলু কিনতে হচ্ছে হিমঘরের গেটে।

ফোরাম অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশনের দক্ষিণ ২৪ পরগনার আহ্বায়ক আবু বক্কর পাইক বলেন, “বড় পাইকারদের হাতে পুরনো দরে কেনা মাল এখনও রয়ে গিয়েছে। তাই দামটা এখনও ১৪ টাকায় নামছে না।” তবে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে হিমঘর থেকে আলু এনে মজুত করে দাম বাড়াচ্ছেন না তো আলুর ব্যবসায়ীরা।

বাড়তি সমস্যা বাধিয়েছে ফড়ে-দালালদের একটা অংশ। হিমঘরের গেট থেকে বড় পাইকাররা আলু কিনে তা মহকুমার বড় বাজারগুলিতে বিক্রি করছেন। সেখান থেকে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপের ছোট বাজারগুলিতে সেই আলু আরও দাম চড়িয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। শুক্রবারও কাকদ্বীপে ১৯ টাকা দরে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে। ডায়মন্ড হারবারের রত্নেশ্বরপুর, কুলপিস উকিলের হাট, নামখানা, উস্থি, আমতলার মতো অপেক্ষাকৃত ছোট বাজারগুলিতেও একই জিনিস চলছে বলে নজরে এসেছে জেলা এনফোর্সমেন্ট শাখার।

বৃহস্পতিবারও কয়েকটি বাজারে গিয়ে ১৪টাকা কিলো দরে আলু বিক্রি করার পরামর্শ দিয়ে এসেছে জেলা এনফোর্সমেন্ট শাখা। কিন্তু জেলা সদর থেকে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বিষয়টিতে নজরদারি চালানো ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা একা এনফোর্সমেন্ট শাখার পক্ষে অসম্ভব। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার সহ-কৃষি বিপণন আধিকারিকের দফতর থেকে জেলা সদরে আলুর যা দর পাঠানো হয়েছে, তাতে জ্যোতি আলুর দাম ১৫ থেকে ১৭ টাকা ও পেঁয়াজের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নাসিকের পেঁয়াজ ৩০ টাকা দরে বিকোলেও তা বাজার থেকে উধাও।

ডায়মন্ড হারবার মহকুমার সহ-কৃষি বিপণন আধিকারিক সুপ্রিয় দাস বলেন, “আমরা নজর রাখছি। উপর থেকে নির্দেশ এলে সেই মতো কাজ করব।”

কাকদ্বীপের সহ-কৃষি বিপণন আধিকারিক সুপ্রিয় দাস বলেন, “আগের বার দাম বেড়ে গেলে সরকারের তরফে আলু ব্যবসায়ীদের কাছে আলু পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বার এখনও সেই ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা করছি, দাম নিয়ন্ত্রণে আনার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.