বেসরকারি হোম থেকে সোমবার রাতে দু’দফায় পালিয়ে গেল ১৭ জন কিশোর। তাদের মধ্যে ৪ জনকে উদ্ধার করা গেলেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে হোম কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
জেলা প্রশাসন ও হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার মালিপুকুর সমাজ উন্নয়ন সমিতির ওই হোম থেকে সোমবার রাত ৮টা এবং রাত ১০টায় দু’দফায় মোট ১৭ জন আবাসিক কিশোর পালায়। হোম কর্তৃপক্ষ পাঁচলা থানায় খবর দেন। পুলিশ ধূলাগড়ি এবং রানিহাটি থেকে ৪ জনকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া কিশোরেরা পালানোর কারণ নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, তিন তলা হোমের পাশে কয়েকটি সুপারি গাছ রয়েছে। তারমধ্যে একটি ছিল হোমের পাশে। দোতলার দেওয়ালে গর্ত করে ওই সুপারি গাছ বেয়েই চম্পট দেয় কিশোরেরা। বিষয়টি জানতে পেরে হোম কর্তৃপক্ষ সোমবার রাতেই সুপারি গাছটি কেটে দিয়েছেন।
জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে বাংলাদেশের এক কিশোর আবাসিক হিসেবে থাকলেও তার বাড়ির লোকজনকে সেই বিষয়ে না জানানোর অভিযোগ উঠেছিল ওই হোমের বিরুদ্ধে। কিশোরটি পরে হোম থেকে পালিয়ে যায়। তাকে শিয়ালদহের একটি বেসরকারি হোম থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। হোম কর্তৃপক্ষ তখন দাবি করেছিলেন, ওই কিশোর সেখানে নাম ভাঁড়িয়ে ছিল। কিশোর পাল্টা অভিযোগ করে বলে, পাঁচলার হোমটিতে তার উপরে অত্যাচার করা হত। তদন্তের পরে হোমটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতর। সিডব্লিউসি ওই হোমে শিশু ও কিশোর পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিল। হোমের আবাসিকদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বছরখানেক আগে ফের ওই হোমের কাজ চালুর নির্দেশ দেয় সমাজকল্যাণ দফতর। যদিও আবাসিকদের উপরে নিপীড়নের অভিযোগ মানেননি হোম কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতের ঘটনা নিয়েও তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
মঙ্গলবার দফায় দফায় হোমে আসেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। হাওড়ার জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই হোমের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা ওখানে গিয়ে সব খতিয়ে দেখছেন।’’ তিনি জানান, এখন নিখোঁজ কিশোরদের উদ্ধার করাই প্রধান উদ্দেশ্য। এর পর তদন্তের ভিত্তিতে যদি দেখা যায় হোমের গাফিলতি ছিল তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।