Advertisement
E-Paper

চুম্বকে পয়সা তুলতে গিয়ে ডুবে মৃত্যু ২ বালকের

রোজ স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার আগে গঙ্গায় দড়িতে বাঁধা চুম্বক ছুড়ে পয়সা তোলা ছিল তাদের নেশা। শুক্রবার দুপুরেও তা করতে গিয়েই জোয়ারের সময় তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল দুই বালকের। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৬
শুক্রবার দুর্ঘটনার পরেও দেখা গিয়েছে এই দৃশ্য।

শুক্রবার দুর্ঘটনার পরেও দেখা গিয়েছে এই দৃশ্য।

রোজ স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার আগে গঙ্গায় দড়িতে বাঁধা চুম্বক ছুড়ে পয়সা তোলা ছিল তাদের নেশা। শুক্রবার দুপুরেও তা করতে গিয়েই জোয়ারের সময় তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল দুই বালকের। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়।

দড়িতে চুম্বক বেঁধে গঙ্গার বুকে ছুড়ে দেওয়া। জলের তলায় পৌঁছে যাওয়া সেই চুম্বকে আটকে যায় এক টাকা, দু’টাকা কখনও পাঁচ টাকার কয়েন। আর তার লোভেই মেতে ওঠে ছেলে-ছোকরার দল। কারা ফেলে পয়সা? গঙ্গার ধারে উলুবেড়িয়া কালীবাড়ি। প্রতিদিন কয়েকশো ভক্ত আসেন পুজো দিতে। তাঁদের অনেকেই ‘পূণ্যের’ আশায় গঙ্গায় পয়সা ছোড়েন। সেই পয়সা পেতে গিয়েই এদিনের দুর্ঘটনা।

উলুবেড়িয়া কালীবাড়ির পরিচালন সমিতির সম্পাদক দেবাশিস রক্ষিত বলেন, ‘‘গঙ্গার ওই ঘাটগুলি আমাদের নয়। তবু আমরা সতর্ক করি। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের পদক্ষেপ করা উচিত।’’ জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তা জানান, আজ শনিবার থেকেই গঙ্গার ওই ঘাটে কড়া নজরদারি চালানো হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ঋক সাঁতরা (৯) এবং শেখ আজাদের (৬) বাড়ি উলুবেড়িয়ার হাটকালীগঞ্জে। স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে ঋক তৃতীয় শ্রেণিতে ও আজাদ প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। রোজ স্কুল থেকে ফিরে তারা গঙ্গার ঘাটে গেলেও এ দিন অবশ্য তারা স্কুলে যায়নি।

ঋক সাঁতরা ও শেখ আজাদ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন বেলা ১১টা নাগাদ ঋক ও আজাদ পৌঁছে গিয়েছিল কালীবাড়িতে গঙ্গার ধারে। সেখানে তখন তাদেরই বয়সী অনেকে মেতে উঠেছে গঙ্গা থেকে পয়সা তোলার খেলায়। রান্না পুজো উপলক্ষে গঙ্গায় স্নানের জন্য ভিড়ও ছিল অন্য দিনের তুলনায় বেশি। স্নান করার পর তাঁদের অনেকেই পয়সা ছুঁড়ছিলেন গঙ্গায়। বেলা ৩টে নাগাদ ঋক এবং আজাদ জলে নামে। পয়সা তোলার টানে গঙ্গায় বেশ খানিকটা দূরেও চলে যায় তারা। সেই সময় জোয়ার এসে যাওয়ায় আর ফিরতে পারেনি তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাড়ে দাঁড়িয়ে তাঁরা দু’জনকেই প্রবল স্রোতে তলিয়ে যেতে দেখেন। খবর পেয়ে নৌকা নিয়ে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। প্রায় এক ঘণ্টা পরে দুজনের দেহ উদ্ধার হয় মাঝগঙ্গা থেকে।

ঋকের বাবা বিশ্বনাথবাবু রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আজাদের বাবা মাস তিনেক আগে মারা গিয়েছেন। মা নুরজাহান অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘ছেলে বাড়িতেই ছিল। কিন্তু ১১টার পর থেকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করি। ও যে গঙ্গায় এই ভাবে পয়সা তুলতে যেত জানতাম না।’’ নুরজাহানের কথায়, ‘‘আজ স্কুলে না গিয়ে বাড়িতেই ছিল। খেলছিল। আমি কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে শুনলাম ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরেই ওর মৃত্যুর খবর পাই।’’

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উলুবেড়িয়া দক্ষিণকেন্দ্রের বিধায়ক পুলক রায় হাসপাতালে যান। তিনি বলেন, ‘‘এটা দুর্ঘটনা। তবে এ ভাবে গঙ্গায় পয়সা তোলা বন্ধ হওয়া দরকার। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Accident uluberia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy