Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Crime

পুকুরে কন্যাসন্তানের দেহ, আটক বাবা-দাদু

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত শিশুর বাবা সায়ক মাঝি কলকাতায় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করতেন।

এই পুকুরেই মেলে দেহ। —নিজস্ব চিত্র

এই পুকুরেই মেলে দেহ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৩
Share: Save:

রাতে বাবা-মায়ের পাশে ঘুমিয়েছিল ১৫ দিনের কন্যাসন্তান। মঙ্গলবার সকালে সেই সদ্যোজাতের দেহ মিলল বাড়ির পাশে একটি পুকুর থেকে। শ্যামপুরের মরশাল গ্রামের তেঁতুলতলা এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ওই সদ্যোজাতের বাবা ও দাদুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত শিশুর বাবা সায়ক মাঝি কলকাতায় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করতেন। শিলিগুড়ির বাসিন্দা সোনিয়ার সঙ্গে তাঁর ফেসবুকে পরিচয় হয়। বছর দেড়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। কলকাতায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা।লকডাউন ঘোষণার মাস তিনেক আগে সায়ক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে শ্যামপুর চলে আসেন। দিন ১৫ আগে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সোনিয়া। সদ্যোজাতের নাম দেওয়া হয় আরাধ্যা। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে আরাধ্যাকে নিয়ে নিজেদের ঘরে শুতে যান সায়ক ও সোনিয়া। পাশের ঘরে শুয়ে ছিলেন সায়কের বাবা শৈবালবাবু ও তাঁর স্ত্রী সুমিত্রাদেবী।

এ দিন সোনিয়া বলেন, ‘‘ভোর ৩টে নাগাদ ঘুম ভেঙে গেলে দেখি পাশে মেয়ে নেই। চিৎকার শুরু করি। পাশে শুয়ে ছিলেন আমার স্বামী। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। তারপর পুলিশে খবর দিই।’’ সকাল হতেই দেখা যায়, বাড়ি থেকে আনুমানিক দেড়শো ফুট দূরে একটি পুকুরে শিশুটির মৃতদেহ ভাসছে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়।সোনিয়াদের শোয়ার ঘরের দরজা রাতে বন্ধ ছিল না। পুলিশের অনুমান, রাতে কেউ তাঁদের ঘরে ঢুকে সদ্যোজাত শিশুটিকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। বাড়ি থেকে বেরনোর মূল দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। গোটা ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা মৃত শিশুর বাবা ও দাদুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করেছি। তদন্ত চলছে।’’ মঙ্গলবার বিকালে ময়না-তদন্তের পরে আরাধ্যার দেহ এলাকায় এলে গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় পরিবারের তরফে কেউ অভিযোগ করেনি। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিশুটির বাবা ও দাদুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। শিশুটির সৎকারের জন্য বাবা ও দাদুর থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছাড়া হয়েছে। প্রয়োজনে ফের তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’

স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘ওই পরিবারে মোট চার জন বাস করেন। দোতলা পাকা বাড়ি। সকলেই দোতলায় থাকেন। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘোকার মূল দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বাইরের কেউ শিশুটিকে জলে ফেলতে পারবে না। পুলিশ সঠিক ভাবে পরিবারের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সত্য বেরিয়ে পড়বে।’’ পুলিশের সন্দেহ পরিচিতি কোনও ব্যক্তি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE