—প্রতীকী ছবি
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার।
২০১৪ সালে অস্ত্র-সহ ধরা পড়েই হাজতবাস করতে হয়েছিল চন্দননগরের অস্ত্র কারখানার মালিক প্রণবেশ দে’কে। বৃহস্পতিবার রাতেও আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরে পড়ে সে। পুলিশের দাবি, জেরায় সাবিনাড়ার ওই যুবক জানিয়েছে, সাধারণত সে নিজে অস্ত্র সরবরাহ করত না। লোক দিয়ে কাজ চালাত। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল বৃহস্পতিবার। সেটাই কাল হল বলে তার আক্ষেপ।
তদন্তে নেমে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দারা বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। কী ভাবে এক টোটো-চালক ধীরে ধীরে অস্ত্র কারবারি হয়ে গেল, কী ভাবে সে বিহারের বিভিন্ন এলাকার অস্ত্রের কারিগরদের জোগাড় করল, ওই চক্রে আরও কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। প্রণবেশের বাড়ির দোতলার ঘরে হানা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পুরো তৈরি না-হওয়া কিছু আগ্নেয়াস্ত্র এবং যন্ত্রপাতির সঙ্গে কিছু তাজা গুলিও পুলিশ উদ্ধার করে। কিন্তু সেই গুলি তৈরির কোনও যন্ত্রপাতি মেলেনি। গুলি ওই ঘরে কী ভাবে আসত, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের খবর।
পুলিশের দাবি, জেরায় প্রণবেশ জানিয়েছে, সে হুগলি ছাড়াও হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বর্ধমান এবং আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র সরবরাহ করত। পাঠাত ভিন্ রাজ্যেও। নিজের রোজগার বাড়াতেই সে টোটো চালানো ছেড়ে এই ব্যবসায় নামে। প্রণবেশের এই দাবি কতদূর ঠিক এবং যে সব ঠিকানায় অস্ত্র পাঠানোর কথা সে জানিয়েছে, তার হদিস পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রণবেশের সঙ্গে রানিঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয় এ শহরের লিচুপট্টির বাসিন্দা বাপন মণ্ডল এবং নৈহাটির নুরউদ্দিনকেও। ধৃতদের শুক্রবার চন্দননগর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ৬ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, তিন জনকে গ্রেফতার করা গেলেও ওই কারবারে আরও অনেকের জড়িত থাকার সম্ভাবনা। জাল কতদূর বিস্তৃত তা দেখা হচ্ছে।
শুক্রবারই প্রণবেশের মা রিনাদেবী দাবি করেছিলেন ছেলের অস্ত্র কারবারের কথা তাঁরা কিছুই জানতেন না। তাঁরা জানতেন, ছেলে টোটো চালিয়ে সংসার টানে। পুলিশ আসার পরে তাঁরা ছেলের অস্ত্র কারবারের কথা জানতে পারেন। একই সঙ্গে রিনাদেবী দাবি করেছিলেন, ‘‘ছেলে ওই ঘরে (অস্ত্র কারখানা) আমাদের ঢুকতে দিত না।’’ শনিবার একই দাবি করেন প্রণবেশের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনমুনও। তিনি বর্তমানে চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগরে বাপের বাড়িতে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দু’বছর আগে আমার বিয়ে হয়। টোটো চালানো ছেড়ে স্বামী ওই ঘরে টোটোর যন্ত্রাংশ তৈরি করত বলেছিল। তবে আমাকে ঢুকতে দিত না। জানতাম না ওই ঘরে অস্ত্র তৈরি হত।’’
প্রণবেশের পরিবারের এই দাবিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy