হাসপাতালে সৈকত।
সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে এক যুবকের শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। গুরুতর অবস্থায় ওই যুবককে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাওড়ার বাউড়িয়ার সন্তোষপুর কালীতলা এলাকায় শনিবার রাতের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত সৈকত দাস তাঁর কাকার সোনার দোকানে কাজ করেন। অভিযোগ, ওই দিন রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময় তাঁর আত্মীয়রা রাস্তায় তাঁকে ধরে মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তিনি বাধা দিতে গেলে তাঁর বাঁ হাতে অ্যাসিড পড়ে পুড়ে যায়। ধস্তাধস্তির সময় তাঁর পেটের ডান দিকের কিছুটা অংশ এবং পিঠের দিকের কিছু অংশও অ্যাসিডে পুড়ে গিয়েছে। সৈকতের পরিবারের তরফে বাউড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে রবিবার পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সৈকতের সঙ্গে তাঁর দূরসম্পর্কের জ্যাঠা সন্তোষ দে’র সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ দীর্ঘদিনের। তা থানা অবধিও গড়িয়েছে। গত এপ্রিল মাসে দু’তরফে ব্যাপক গণ্ডগোলও হয়। সেই সময় সন্তোষবাবুরা সৈকতদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পাল্টা জ্যাঠার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সৈকত। সৈকতদের পরিবারের অভিযোগ, তার পর থেকেই অভিযোগ তুলতে সন্তোষবাবুরা ক্রমাগত চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু তাঁরা তা শোনেননি। সেই কারণেই সৈকতের উপরে এই হামলা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে সন্তোষবাবুদের বিরুদ্ধে মারধর, চক্রান্ত, অ্যাসিড হামলার অভিযোগ দায়ের করে মামলা শুরু হয়েছে। পুলিশের দাবি, সৈকতের উপরে হামলায় যে ধরনের অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়েছে তা শৌচালয় পরিষ্কারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
রবিবার হাসপাতালে শুয়ে সৈকত বলেন, ‘‘অন্য দিনের মতো শনিবারও সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বাড়িতে আসছিলাম টিফিন করতে। বাড়ির কাছে একটু কম আলো ছিল। সেখানে এলে আচমকা কয়েকজন আমাকে জড়িয়ে ধরে মুখ চেপে ধরে। তারপর জেঠু পকেট থেকে একটা বোতল বার করে আমাকে লক্ষ্য করে ছিটিয়ে দেয়। আমি হাত মুখ আড়াল করলে হাতের পিছনে লেগে জ্বালা করতে শুরু করে। পেটেরও কিছুটা অংশ জ্বালা করতে থাকে। জেঠুর জামাই মদন রায় জ্যেঠুকে আমার মুখে অ্যাসিড ঢেলে দিতে বলে। কোনও রকমে ওদের হাত ছাড়িয়ে পালানোর সময় ওরা অ্যাসিডের বোতলটা আমার দিকে ছুড়ে দিলে তা পিঠে লেগে জ্বালা করতে থাকে। আমার চিৎকারে লোকজন জড়ে হলে ওরা পালিয়ে যায়।’’
বাড়িতে সৈকতের স্ত্রী ও বাবা-মা রয়েছেন। সৈকতের উপরে এমন হামলায় নিরাপত্তার আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, জ্যাঠারা প্রায়ই সৈকতকে মারধরের হুমকি দিত। কিন্তু এ ভাবে যে অ্যাসিড নিয়ে হামলা করবে, তা তাঁরা কখনও ভাবতে পারেননি।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy