Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধুকে পিষে দিয়েছিল লরি, জেরায় স্বীকার যুবকের

গত শনিবার রাতে বালিঘাট বাসস্টপের কাছে রাস্তার মাঝখানে মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলানো অবস্থায় এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখে বালি থানার টহলরত পুলিশ।

গৌতম পাল

গৌতম পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৩
Share: Save:

বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক যুবক। পুলিশের জেরায় সেই বন্ধু দাবি করেন, চার দিন আগেই দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু হলেও তিনি কাউকে জানাননি। ঘটনাটি নিছকই দুর্ঘটনা, না কি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই বন্ধুকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে হাওড়া মর্গে গিয়ে মৃতের দেহ শনাক্ত করেন পরিজনেরা। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম গৌতম পাল (২৫)। গত শনিবার রাতে বালিঘাট বাসস্টপের কাছে রাস্তার মাঝখানে মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলানো অবস্থায় এক যুবককে পড়ে থাকতে দেখে বালি থানার টহলরত পুলিশ। সেখান থেকে যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের অনুমান, কোনও ভারী গাড়ি ওই যুবককে পিষে দিয়ে গিয়েছিল।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বসুকাটি চড়কতলার বাসিন্দা গৌতম কাঁসা-পিতল পালিশের কারখানায় কাজ করতেন। চলতি মাসের ৩ তারিখ, শনিবার রাতে প্রতিবেশী যুবক মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাইকে চেপে বেরিয়ে ছিলেন তিনি। রাত বাড়লেও গৌতম বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও সন্ধান পায়নি তার পরিবার। গৌতমের খুড়তুতো দাদা তাপস বলেন, ‘‘মৃত্যুঞ্জয় বারবারই কিছু জানেন না বলে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তাতেই আমাদের সন্দেহ হয়।’’ ৬ অগস্ট মঙ্গলবার নিশ্চিন্দা থানায় গিয়ে তাপসবাবুরা বিষয়টি জানালে পুলিশ সে দিনই মৃত্যুঞ্জয়কে আটক করে।

মৃত্যুঞ্জয় পুলিশের কাছে দাবি করেন, শনিবার রাতে গৌতমের কথা মতো তাঁকে দু’নম্বর জাতীয় সড়কে রাজচন্দ্রপুর বাসস্টপে নামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাত ১২টা নাগাদ বন্ধুকে কেন একা রেখে তিনি বাড়ি চলে গেলেন? সেই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি পেশায় স্কুলগাড়ির চালক মৃত্যুঞ্জয়। পরে তাঁকে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। মৃত্যুঞ্জয়কে নিজেদের হেফাজতে এনে দফায় দফায় জেরা শুরু করতেই তিনি স্বীকার করেন, গৌতম দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত যুবক দাবি করেন, গত শনিবার রাতে ডানলপ থেকে ফেরার সময়ে একটি লরি তাঁদের বাইকে ধাক্কা মারে। তাতেই বাইকের পিছনে বসে থাকা গৌতম পড়ে গেলে লরিটি তাঁকে পিষে দেয়। এর পরে সেখান থেকে বাইক নিয়ে পালিয়ে যান মৃত্যুঞ্জয়। তাপস বলেন, ‘‘এটি দুর্ঘটনা নয়। আমার ভাইকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘বন্ধুকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে ওই যুবক পালিয়ে গেলেন কেন, সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident Police Interrogation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE