ফের দুরন্ত গতি। ফের দুর্ঘটনা। ফের দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে।
ছ’দিন আগেই গুড়াপে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মেরে মারা গিয়েছিলেন একই পরিবারের তিন জন। দুর্ঘটনার পরে পুলিশ জানিয়েছিল, অতিরিক্ত গতির জন্যই গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়নি। শনিবার সকালে ফের দুর্ঘটনা ঘটল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। গুড়াপের পরে এ বার দুর্ঘটনাস্থল ডানকুনির হাউজিং মোড়। এ বারও দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি। এ দিন প্রাণহানি না হলেও গুরুতর আহত হয়েছে দুই কিশোর। তাদের মধ্যে একজন দশম শ্রেণির পড়ুয়া। পুলিশের দাবি, সেই পড়ুয়াই গাড়িটি চালাচ্ছিল।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের নাম সাইল গুপ্ত এবং রূপেশ সিংহ। দু’জনেরই বয়স সতেরোর আশপাশে। তাদের বাড়ি ডানকুনির হাউজিং মোড়ের কাছে। সাইল স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র। সে গাড়ি চালাচ্ছিল। তার বন্ধু রূপেশ পাশেই বসেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটি সাহিলের বাবার। সাহিল সেটি নিয়েই ঘুরতে বেরিয়েছিল।
শনিবার সকালে এক্সপ্রেসওয়ের এখানেই দুর্ঘটনা ঘটে (নীচে) ছবি: দীপঙ্কর দে
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সাড়ে ১১টা নাগাদ সাদা রঙের ওই গাড়িটি বর্ধমানের দিক থেকে ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিমি বেগে কলকাতার দিকে আসছিল। ডানকুনির হাউজিং মোড়ের কাছে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাল্টি খেতে খেতে ডিভাইডার টপকে সার্ভিস রোডে চলে যায়। গাড়িটির ধাক্কায় ভেঙে যায় ডিভাইডারে লাগানো তিনটি গাছ। দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়িটির সামনের অংশ। পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা গাড়ির ভিতর থেকে দু’জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
জাতীয় সড়ক পরিবহণ সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গতি-বিধি না মানাতেই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে বারবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে নানা গাড়ি। ২০১৬ সালে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্ঘটনা ঘটেছিল দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। কানঘেঁষে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এই রাস্তাতেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের। তার পর অনেক হইচই হলেও দুর্ঘটনা কমেনি। মাস কয়েক আগেই বর্ধমানে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে গরম পিচের ডাম্পারে ধাক্কা মেরে একই পরিবারের ছয় জন মারা গিয়েছিলেন।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে পরপর দুর্ঘটনার পরে পুলিশের নজরদারি বেড়েছে। সম্প্রতি এই রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ইমারতি দ্রব্য সরিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তার পাশের গুমটিগুলি সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু তারপরেও দুর্ঘটনা কমছে না।