Advertisement
E-Paper

এ বার বাউড়িয়ায় বধূকে খুনের অভিযোগ, ধৃত ৪

সিআইডি তদন্তভার নিলেও এখনও কিনারা হয়নি উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়ার গৃহবধূ মিতা মণ্ডলের মৃত্যু-রহস্যের। তার মধ্যেই কুশবেড়িয়ার পাশের এলাকা বাউড়িয়ায় আর এক গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। তবে, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই পুলিশ মৃতার স্বামী-সহ অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৫০
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত দীপা হাজরার (ডান দিকে) মা। — সুব্রত জানা

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃত দীপা হাজরার (ডান দিকে) মা। — সুব্রত জানা

সিআইডি তদন্তভার নিলেও এখনও কিনারা হয়নি উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়ার গৃহবধূ মিতা মণ্ডলের মৃত্যু-রহস্যের। তার মধ্যেই কুশবেড়িয়ার পাশের এলাকা বাউড়িয়ায় আর এক গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। তবে, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই পুলিশ মৃতার স্বামী-সহ অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার রাতে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় বাউড়িয়ার বুড়িখালির বাসিন্দা দীপা হাজরা (২২) নামে ওই বধূর দেহ মেলে তাঁর ঘরের বিছানায়। তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, বিয়েতে নগদ ৫০ হাজার টাকা, সোনার গয়না এবং খাট-বিছানা পণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী সঞ্জয় টাকার জন্য স্ত্রীর উপরে চাপ দিতে থাকে। না দিতে পারায় দীপাকে একাধিকবার মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বছর দেড়েক ধরে সঞ্জয়ের সঙ্গে এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীপা মানতে পারেননি। এতে সঞ্জয়ের অত্যাচার বেড়ে যায়। সেই কারণে এবং বাড়তি পণ না-মেলায় দীপাকে খুন করা হয়।

এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার পুলিশ দীপার স্বামী সঞ্জয়, শাশুড়ি কাঞ্চনদেবী, দেওর অজয় এবং তাদের প্রতিবেশী কবিতা হাজরা নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করে। দীপার চার বছরের পুত্রসন্তান আছে। তার সামনেই দীপাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। খুনের অভিযোগ উড়িয়ে দীপার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। এ দিনই দীপার দেহের ময়না-তদন্ত হয়। তার আগে এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেহের সুরতহাল করেন। দীপার মৃত্যুর কথা জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার তাঁর শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, দিনের পর দিন দীপার উপরে অত্যাচার চালানো হয়েছে। গ্রেফতারের আগে কবিতাকেও বেধড়ক মারধর করেন পড়শিরা।

দীপার শিশুপুত্রকে পুলিশ এই মামলার সাক্ষী করছে। হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন, ৪৯৮এ ধারায় পণের দাবিতে অত্যাচার এবং যেহেতু বিয়ের সাত বছরের মধ্যে (২০১০ সালে বিয়ে হয় দীপার) মধ্যে এই অপমৃত্যু, তাই ৩০৪বি ধারায় পণের জন্য মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ, শুক্রবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে ধৃতদের হাজির করানো হবে। বিচারকের কাছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারায় ওই শিশুটির গোপন জবানবন্দি দেওয়ানোর ব্যবস্থা করা হবে। হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই জানা যাবে ওই বধূর কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে।

দীপার বাপের বাড়ি উলুবেড়িয়ার বাগাণ্ডার বিশ্বেশ্বরপুরে। তাঁর বাবা সমর মাঝি পেশায় দিনমজুর। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার গভীর রাতে জামাই ফোনে জানায়, মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানে গিয়ে দেখি বিছানায় দেহ পড়ে রয়েছে। গলায় ওড়নার ফাঁস। মেয়েকে খুন করে ওরা দেহটা ওই ভাবে রেখে দিয়েছিল।’’ দীপার মা কাকলিদেবী বলেন, ‘‘নাতির চোখের সামনে সব ঘটেছে। নাতি আমাকে বলেছে তার বাবা, ঠাকুমা, কাকা এবং কবিতা মাকে গলা টিপে মেরেছে।’’

allegation murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy