কারও উপরে হামলা হয়েছিল এক বছর আগে। কারও উপরে তিন বা চার বছর আগে।
কিন্তু এতদিনেও তাঁরা সরকারি ক্ষতিপূরণ পাননি। দ্বারস্থ হয়েছিলেন জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (ডালসা)। হুগলিতে অ্যাসিড আক্রান্ত এমন ছ’জনের ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নির্ধারণ করে তা মিটিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করল জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ (ডালসা)। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ডালসা-র ‘ক্রিমিনাল ইনজুরিজ কমপেনশেসন বোর্ড’ বসে। সেখানেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
ডালসা-র সচিব সৌনক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ধার্য করা হয়েছে। আক্রান্তদের পরবর্তী চিকিৎসা এবং যথাযথ পরীক্ষা করে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেওয়ার ব্যাপারেও সুপারিশ করা হয়েছে। রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (সালসা) কাছে সুপারিশ পাঠানো হচ্ছে।’’ আক্রান্তেরা শীঘ্রই টাকা পেয়ে যাবেন বলে ডালসা-র আশা।
২০১৪ সালের ৬ জুলাই ধনেখালির কানানদী এলাকার রোজিপুরের এক তরুণী অ্যাসিডে আক্রান্ত হন। ঘটনায় দোষী সবুর আলিকে মাস তিনেক আগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয় চুঁচুড়া আদালত। আদালত নির্যাতিতার ক্ষতিপূরণের বিষয়টি ডালসা-র কাছে পাঠান। তরুণীও ডালসা-র কাছে আবেদন করেন। তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখে এবং খোঁজ নিয়ে বোর্ড সুপারিশ করে ‘সেন্ট্রাল ভিক্টিম কমপেনসেশন স্কিম’-এ নির্যাতিতা ৩ লক্ষ টাকা পাবেন। এই টাকা দেবে সালসা। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে আরও ১ লক্ষ টাকার সুপারিশ করা হয় অতিরিক্ত আইনি পরিষেবা হিসেবে।
পোলবার মহানাদে এক বৃদ্ধার উপর অ্যাসিড হামলা হয় ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। বিশ্বজিৎ রায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। গত বছর এপ্রিলে ডালসা-র কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছিলেন বৃদ্ধা। ধনেখালির তরুণীর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের যে মাত্রা ধার্য হয়েছে, এ ক্ষেত্রেও একই সুপারিশ করা হয়। সমান সুপারিশ করা হয়েছে আরও অ্যাসিড আক্রান্ত আরও দুই তরুণীর ক্ষেত্রেও।
দু’বছর আগে জাঙ্গিপাড়ার হরিহরপুরে বাড়িতে ঘুমন্ত বাসুদেব ঘোড়ুই ও তাঁর নাবালক ছেলে সৌরভের গায়ে অ্যাসিড ছোড়া হয়। বাসুদেববাবুর ক্ষেত্রে আগের ঘটনাগুলির মতো একই সুপারিশ করা হয়। সৌরভের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ হয় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্দেশিকা অনুযায়ী, অ্যাসিড আক্রান্তের বয়স ১৪ বছরের কম হলে, ন্যূনতম ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বড়দের ক্ষেত্রে নির্ধারিত অঙ্কের ৫০% বেশি হবে। ঘটনার সময় সৌরভের বয়স ছিল ১২ বছর। সেই কারণের ক্ষতিপূরণের অঙ্ক সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
কয়েক বছর আগে অ্যাসিডে জখম আর এক তরুণীকে তখনকার নিয়ম অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য ২০ হাজার টাকা, ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ হাজার টাকা এবং এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। তাঁর বিষয়টি বোর্ডে পুনর্বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বর্তমান বিধি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লক্ষ টাকা, প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে আরও ১ লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারেও সুপারিশ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy