Advertisement
E-Paper

ডিজিটাল রেশন কার্ড নিয়ে বিক্ষোভ

ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি নিয়ে হুগলিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে সিপিএম। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে সিপিএম। রবিবার সকালে শ্রীরামপুরে বিক্ষোভ দেখাল দলের ছাত্র ও যুব সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০১:০৭
চলছে অবরোধ। ছবি: প্রকাশ পাল।

চলছে অবরোধ। ছবি: প্রকাশ পাল।

ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি নিয়ে হুগলিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে সিপিএম। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে সিপিএম। রবিবার সকালে শ্রীরামপুরে বিক্ষোভ দেখাল দলের ছাত্র ও যুব সংগঠন। আধ ঘণ্টা জিটি রোড অবরোধ করা হয়। দিন কয়েক আগে বৈদ্যবাটিতেও ওই রাস্তা অবরোধ করেছিল সিপিএম। রেশন অফিসে বিক্ষোভও দেখানো হয়। তৃণমূলের দাবি, ডিজিটাল রেশন কার্ড কেন্দ্রীয় প্রকল্প। এটা রাজ্যের বিষয় নয়।

বস্তুত, নতুন কার্ড অনেক প্রকৃত উপভোক্তার হাতে পৌঁছচ্ছে না বলে দিন কয়েক ধরেই অভিযোগ তুলছেন হুগলি জেলার বহু রেশন ডিলার। তাঁদের বক্তব্য, নতুন ব্যবস্থায় ডিজিটাল কার্ড ছাড়া রেশন দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে, চাল-ডাল পড়ে থাকছে। আর রেশনে মালপত্র না পেয়ে বাসিন্দারা তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এ ব্যাপারে পাণ্ডুয়ার রেশন ডিলাররা সম্প্রতি প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। ‘বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পাণ্ডুয়া শাখার সভাপতি কাশীনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘এই ব্লকে ৩৮ হাজার ২৬৩টি ডিজিটাল রেশন কার্ড পাওয়ার কথা। মাত্র ৩৭টি পেয়েছি।’’

এই সমস্যাটাকেই তুলে ধরে আন্দোলনে নেমেছে সিপিএম। তাদের অভিযোগ, নতুন কার্ড তৈরি এবং বিলির ব্যবস্থা রাজ্য সরকারের হাতেই রয়েছে। কিন্তু অনেক প্রকৃত উপভোক্তা সেই কার্ড পাচ্ছেন না। বহু কার্ডের তথ্য ভুলে ভরা। জেলা ডিওয়াইএফআই সম্পাদক তীর্থঙ্কর রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উন্নত প্রযুক্তির কথা বলে আখেরে গণবণ্টন ব্যবস্থাকে শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছে। সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছে। নতুন ব্যবস্থায় একটা বড় অংশের গরিব মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস রেশন থেকে পাবেন না।’’ পাণ্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। কী করে পাণ্ডুয়ায় ৩৮ হাজার কার্ডের জায়গায় মাত্র ৩৭টি কার্ড এল! বিষয়টি আমি বিধানসভায় তুলব।’’

অসন্তোষের আঁচ পেয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য নড়েচড়ে বসেছেন। বিষয়টি নিয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন। দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত জানান, বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৫ জুলাই জেলা পরিষদ ভবনে বৈঠক ডাকা হয়েছে। জেলার সব মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক থেকে পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান, জেলা সভাধিপতি, কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের থাকার কথা। তপনবাবু বলেন, ‘‘এটা রাজ্যের প্রকল্প না হলেও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে আমরা বৈঠকের পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করব। যে সব প্রকৃত গরিব মানুষের নাম ডিজিটাল রেশন কার্ডের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, তাঁদের নাম নথিভুক্ত করার চেষ্টা করা হবে। সিপিএম ভোটের রাজনীতি করছে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গণবণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে এবং গ্রাহকদের সম্পূর্ণ তথ্যভাণ্ডার গড়ে তুলতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারা দেশেই ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। যে সব গরিব মানুষ কেন্দ্রের খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় রয়েছেন, তাঁদের জন্যই ওই কার্ড তৈরি করা হচ্ছে। নতুন ব্যবস্থায় দারিদ্রসীমার উপরে (এপিএল) যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। রাজ্যে বর্তমানে রেশন কার্ডধারী নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি। তার মধ্যে কেন্দ্রের খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় রয়েছেন অন্তত ৬ কোটি মানুষ। হুগলিতে চলতি মাস থেকে ডিজিটাল রেশন কার্ড সরবরাহ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই জেলায় ৬২ লক্ষ রেশন কার্ড রয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল কার্ড হবে ২৪ লক্ষ ৮২ হাজার।

Agitation digital ration card CPM south bengal Sreeram pur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy