Advertisement
E-Paper

জমিতেই পুড়ছে খড়, বাড়ছে দূষণ

একাধিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা বলছে, বাতাসে ভাসমান ধুলিকণার নিরিখে হুগলির বাতাস যথেষ্ট দূষিত। খড় পোড়ানোই হল তার অন্যতম কারণ হল।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও  দীপঙ্কর দে

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:০৪
বহ্নিশিখা: আগুন ধরানো হয়েছে নাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

বহ্নিশিখা: আগুন ধরানো হয়েছে নাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটার পরে জমিতে পড়ে থাকা খড়ের অবশিষ্ট অংশ পুড়িয়ে দেওয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য। অভিযোগ, খড় পোড়ানোর ক্ষতিকর দিক জেনেও সেটি বন্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কৃষি দফতর।

একাধিক পরিবেশ গবেষণা সংস্থা বলছে, বাতাসে ভাসমান ধুলিকণার নিরিখে হুগলির বাতাস যথেষ্ট দূষিত। খড় পোড়ানোই হল তার অন্যতম কারণ হল। পরিবেশ ও মানুষের উপর তার প্রভাব পড়ছে। শ্বাসনালী, ফুসফুসের ক্যানসার, হাঁপানির সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। পরিবেশ আদালতও বিষয়টি নিয়ে সচেতন করেছে। কিন্তু তার পরেও হুগলি-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পরিস্থিতি সেভাবে বদলায়নি।

কেন এই পরিস্থিতি?

এখন যন্ত্রের মাধ্যমে ধান কাটার কাজ হয়। সেখানে অল্প সময়েই জমির ধান কাটা ও ঝাড়া যায়। ধান কাটার পর জমিতে থাকা গোড়ার অবশিষ্ট খড়কে চাষিরা ‘নাড়া’ বলেন। সেগুলি জমিতেই পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। হুগলি-সহ রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই একই ছবি। হুগলির জাঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা, আরামবাগ এলাকার চাষিদের বক্তব্য, গ্রামে একশো দিনের কাজ চালু হওয়ায় পরে চাষের কাজে সেভাবে মজুর পাওয়া যায় না। তাই ধান কাটা থেকে ঝাড়া— সবই যন্ত্রে হচ্ছে। যন্ত্রে ধান কাটার পরে জমিতে রয়ে যাওয়া খড় কোনও কাজে আসে না। তাই সেগুলি পুড়িয়ে দিতে হয়।

চাষিদের একাংশের আবার দাবি, খড়ের ছাই জমির উর্বরতা বাড়ায়। তাই সেগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যদিও কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মত ভিন্ন। তাঁদের মতে, জমিতে পড়ে থাকা খড়ের অবশিষ্ট অংশ পুড়িয়ে দিলে জমির উর্বরতা বাড়ে না, বরং নষ্ট হয়। তাঁদের পরামর্শ, ‘‘খড়ের অবশিষ্ট অংশ জমিতে সংরক্ষণ করে রেখে পচানো গেলে চাষের জন্য ভাল। কারণ পচানো খড়ে জমির উর্বরতা বাড়ে।’’

প্রায় একই কথা বলেছেন পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পোড়ানো খড়ের ছাই মাটির উপযোগী বলে চাষিদের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। উল্টে এর ফলে চাষের উপযোগী পোকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে মাটির উর্বরতা।’’

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘পরিবেশ দফতরের আইনে কোনও বর্জ্য পদার্থই পোড়ানো যায় না। কারণ জমিতে খড় পোড়ালে মাটি ও বায়ুদূষণ হয়। এই কারণেই দিল্লি ও হরিয়ানাতে দূষণ মারাত্মক আকার তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে আলোচনা সভা করে চাষিদের সচেতন করার কাজ চলছে।’’

Fire Hoogly হুগলি আগুন Air pollution বায়ু দূষণ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy