Advertisement
০৪ মে ২০২৪
কেন্দ্রের জল সরবরাহ প্রকল্প

গ্রাহক সংখ্যায় গরমিল, বেশি টাকা নেওয়ার নালিশ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে

বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল ডোমজুড়ের মাকড়দহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতে জলের পাইপ লাইনের সংযোগ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

মনিরুল ইসলাম
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০১:৪২
Share: Save:

বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল ডোমজুড়ের মাকড়দহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতে জলের পাইপ লাইনের সংযোগ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে পঞ্চায়েতের বিরোধী পক্ষ সিপিএম। ব্লক প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেও কাজ না হওয়ায় আদালতের দারস্থ হয়েছে সিপিএম।

যে সব অভিযোগ উঠেছে তা হল এক, গ্রাহকদের বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে। এবং দুই, গ্রাহকের সংখ্যা নিয়ে গরমিল দেখা দিয়েছে। বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সৌমেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জল সরবরাহ নিয়ে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি করেছে এবং ভিডব্লিউএসসি কমিটিও আইন মেনে হয়নি। এই নিয়ে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।’’

বিডিও তমোঘ্ন কর বলেন, ‘‘এরকম অভিযোগ একটা পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এ বিষয়ে প্রধান অপর্ণা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বার বার ফোনে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর ফোনের সুইচ বন্ধ ছিল। এসএমএস করা হলেও কোনও উত্তর আসেনি।

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প চালু করে ২০১২ সালে। নিয়ম অনুযায়ী যে সব পঞ্চায়েত এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের পাইপ লাইন রয়েছে সেখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে এবং বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। যেখানে জলের পাইপ লাইন নেই সেখানে পুরো পরিকাঠামো-ই গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েতকে প্রকল্পটি অধিগ্রহণ করতে হবে এবং তা পরিচালনার ভার গ্রহণ করতে হবে। প্রকল্পটি পরিচালনার জন্য পঞ্চায়েতের অনুমোদন সাপেক্ষে ভিলেজ ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন কমিটি গঠন করতে হবে। তারাই প্রকল্পটি পরিচালনা করবে। পাশাপাশি গ্রাহকদেরও মাসে মাসে জল বাবদ কর দিতে হবে।

ডোমজুড়ের মাকড়দহ ১ পঞ্চায়েতও এই প্রকল্প রূপায়ণে উদ্যোগী হয়। ঠিক হয়, জন স্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জল সরবরাহের যে ব্যবস্থা রয়েছে সেখান থেকেই বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। শুরু হয় আবেদনপত্র জমা নেওয়ার ও বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ। জলের সংযোগের জন্য পরিবার পিছু ২১৫০ টাকা নেওয়া হবে বলে টেন্ডার হয়। কিন্তু অভিযোগ, বাস্তবে ২৬২৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে পঞ্চায়েতের তরফে যুক্তি, বাড়তি ৫২৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়ার জন্য যে রাস্তা কাটা হবে তা সারাইয়ের জন্য। যদিও পঞ্চায়েত সূত্রেই খবর যে, যে ২১৫০ টাকা নেওয়া হবে বলে টেন্ডার হয়েছিল তার মধ্যে ওই খরচও ধরা আছে। এই অবস্থায় কী ভাবে ৫২৫ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু চাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বেশি টাকা নেওয়ার পাশাপাশি আবেদনের ভিত্তিতে কতগুলি পরিবারকে জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে, পঞ্চেয়েতের সেই হিসাবেও গরমিল দেখা গিয়েছে। পঞ্চায়েতের তরফে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭১৮টি পরিবারকে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে দেখা গিয়েছে ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবরের মধ্যেই ৭১৯টি পরিবারকে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panchayat water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE