Advertisement
E-Paper

ছেলে-সহ বিক্রি হওয়া বধূ উদ্ধার লখনউ থেকে

পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত মাস দেড়েক আগে। বালির কালীতলায় স্বামী ও তিন ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন বছর তিরিশের ওই তরুণী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪৬
পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জেনেছে, ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই তরুণী ও তাঁর চার বছর বয়সি ছোট ছেলেটিকে বিক্রি করা হয়েছিল।

পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জেনেছে, ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই তরুণী ও তাঁর চার বছর বয়সি ছোট ছেলেটিকে বিক্রি করা হয়েছিল।

প্রায় কুড়ি দিন কোনও খোঁজ ছিল না তরুণী বধূ ও তাঁর তিন সন্তানের। আচমকাই এক দিন সকালে লখনউ থেকে অপরিচিত এক যুবক ফোন করে ওই তরুণীর দাদাকে জানান, তাঁর আশ্রয়েই রয়েছেন ওই বধূ। এর পরেই পুলিশ ওই তরুণী ও তাঁর এক সন্তানকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। বাকি দুই সন্তানের মধ্যে এক জনের খোঁজ মিললেও অন্য জন এখনও বেপাত্তা।

টাকার লোভে ওই তরু‌ণীকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার কলকাতা স্টেশনের বাইরে থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে নিশ্চিন্দা থানার পুলিশ। ধৃত সিরাজ চক্রবর্তী ওরফে রাজু এবং আনসার আলি ওরফে আশিসের কাছ থেকে আরও এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ওই তরুণীকেও পাচার করা হচ্ছিল। তবে বালির তরুণীকে বিক্রির ঘটনায় অভিযুক্ত আর এক ব্যক্তি স্বপন মজুমদারের এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত মাস দেড়েক আগে। বালির কালীতলায় স্বামী ও তিন ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন বছর তিরিশের ওই তরুণী। বিভিন্ন কারণে স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি হত ওই বধূর। মনমরা অবস্থায় ওই বধূকে দেখে এক সময়ে তাঁর সঙ্গে গল্প করতে শুরু করে বাড়ির পাশেই রাজমিস্ত্রির কাজ করতে আসা আশিস। তার বাড়ি মুর্শিদাবাদে। ওই তরুণী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মামা-ভাগ্নির সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সূত্রেই আশিস ওই তরুণী ও তার তিন ছেলেকে মুর্শিদাবাদ নিয়ে যাবে বলেছিল। সেই মতো এক দিন ওই ব্যক্তির সঙ্গে তিন ছেলেকে নিয়ে শিয়ালদহে পৌঁছন ওই বধূ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অভিযোগ, শিয়ালদহে এসে হাজির হয় যাদবপুরের বাসিন্দা সিরাজ ও স্বপন। তরুণী বলেন, ‘‘ওদের নিজের বন্ধু বলে পরিচয় দিয়েছিল আশিস। আমাদের নিয়ে ওরা লালগোলা প্যাসেঞ্জারে ওঠার বদলে অন্য দূরপাল্লার ট্রেনে উঠে পড়ে। প্রথমে কোনও সন্দেহ হয়নি। পরে লখনউয়ে এক ব্যক্তির বাড়িতে নিয়ে যায় আমাকে।’’ বধূ জানান, পরে তিনি বুঝতে পারেন, তাঁকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ধৃতদের জেরা করে জেনেছে, ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই তরুণী ও তাঁর চার বছর বয়সি ছোট ছেলেটিকে বিক্রি করা হয়েছিল। বাকি দুই ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় ফিরে আসে ওই তিন ব্যক্তি।

তরুণী জানিয়েছেন, এক দিন ছোট ছেলেকে নিয়ে কোনও ক্রমে পালিয়ে গিয়ে লখনউয়েরই এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে সব ঘটনা খুলে বলেন তিনি। বধূকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে ওই ব্যক্তিই তরুণীর দাদাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পুলিশ বধূ ও তাঁর ছোট ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে এলেও খোঁজ মিলছিল না বাকি দুই সন্তানের। এর পরেই বিভিন্ন সূত্র মারফত ও মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান ধরে পুলিশ জানতে পারে, আশিস ও সিরাজ কলকাতা স্টেশনের কাছাকাছি রয়েছে। নিশ্চিন্দা থানার সাদা পোশাকের পুলিশ গিয়ে তাদের ধরে।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, লখনউ থেকে ফিরে স্বপন ওই বধূর সাত বছরের ছেলেটিকে তার নিঃসন্তান দাদা-বৌদির কাছে নিয়ে গেলে তাঁরা রাখতে রাজি হননি। শেষে কলকাতার একটি থানায় ছেলেটিকে জমা দেয় সে। পুলিশ জেনেছে, ওই বালক এখন হোমে রয়েছে। তবে ন’বছরের বড় ছেলেটিকে স্বপন কোথায় রয়েছে, তারই খোঁজ করছে পুলিশ।

Bali Lucknow Human Trafficking Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy