Advertisement
০৭ মে ২০২৪
এখনও অধরা বন্ধু শুভময় ও তার মা

ভারী কিছুর আঘাতেই মৃত্যু ঈশিতার, রিপোর্ট

অভিযুক্তেরা এখনও ধরা না-পড়ায় হতাশ ঈশিতার বাবা বিমলবাবু এবং মা মিঠুদেবী। শুক্রবার দুপুরে বাগনান থানায় গিয়ে তাঁরা সেই হতাশা প্রকাশ করেন।

বালিশে রক্তের দাগ (উপরে) ঈশিতা দত্ত (ইনসেটে)। ফাইল চিত্র।

বালিশে রক্তের দাগ (উপরে) ঈশিতা দত্ত (ইনসেটে)। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগনান শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০১:০৩
Share: Save:

পেরিয়ে গিয়েছে ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময়। বাগনানের স্কুলছাত্রী ঈশিতা দত্তের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তার বন্ধু শুভময় মণ্ডল এবং শুভময়ের মা সুস্মিতাকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। মাথার পিছনে ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের কারণেই বছর চোদ্দোর ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয় বলে এ দিন ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জেনেছে পুলিশ।

অভিযুক্তেরা এখনও ধরা না-পড়ায় হতাশ ঈশিতার বাবা বিমলবাবু এবং মা মিঠুদেবী। শুক্রবার দুপুরে বাগনান থানায় গিয়ে তাঁরা সেই হতাশা প্রকাশ করেন। বিমলবাবু বলেন, ‘‘মেয়েকে আর ফিরে পাব না জানি। কিন্তু দোষীদের চরম শাস্তি চাই।’’ হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযুক্তেরা রেহাই পাবে না। তাদের ধরার সব রকম চেষ্টা হচ্ছে। দু’জনের মোবাইলই বন্ধ রয়েছে। ফলে, দু’জনের অবস্থান ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।

বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ টিউশন নিতে বেরোয় বাগনানের এনডি ব্লকের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীটি। সন্ধেবেলায় সে নবাসন গ্রামে শুভময়দের বাড়িতে গিয়েছিল বলে তার পরিবারের লোকজন জানতে পারেন। কিন্তু সেখা থেকে ঈশিতা আর ফেরেনি। ফোন করেও শুভময়ের মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি ঈশিতার বাড়ির লোকেরা। রাতে সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, যে ভাড়াঘরে শুভময় ও তার মা থাকত, সেটি তালাবন্ধ। সুস্মিতার মোবাইলেও সাড়া মেলেনি।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই তালাবন্ধ ঘর থেকে ঈশিতার দেহ মেলে। ঘরের প্লাস্টিকের টেবিলের নীচে উপুড় হয়ে পড়েছিল মৃতদেহটি। চটের বস্তা দিয়ে মাথা ঢাকা ছিল। গলায় ফাঁসের দাগ। মাথার পিছনে গভীর ক্ষত থেকে রক্ত চুঁইয়ে পড়ছিল। পা দু’টি নাইলনের দড়িতে বাঁধা ছিল। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে সে দিনই দেহটির ময়নাতদন্ত হয়।

খুনের কারণ নিয়ে এখনও অন্ধকারে ঈশিতার বাবা-মা এবং পুলিশ। তদন্তকারীরা প্রথমে মনে করেছিলেন, শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা সফল না-হওয়ায় স্ক্রু-ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হয় মেয়েটিকে। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জানার পরে তদন্তকারীরা মনে করছেন, ভারী কিছুর আঘাতে যে ঈশিতার মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে আততায়ীরা নিশ্চিত ছিল না। সেই কারণে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো হয়। যাঁর বাড়িতে শুভময়েরা ভাড়া থাকত, সেই সোমা সাঁতরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

এ দিন বিকেলে ঈশিতাদের বাড়ি যায় ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র একটি প্রতিনিধি দল। ওই ফোরামের রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী বিমলবাবুদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। থানায় গিয়ে তাঁরা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিও জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE