দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল হিসাবে মনোনয়নপত্র পেশ করলেন তৃণমূলের প্রধান, উপপ্রধান-সহ সাত পঞ্চায়েত সদস্য। আমতা বিধানসভার আমতা ২ ব্লকের কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতের মোট আসন ১১টি আসনের ১০টিই তৃণমূলের দখলে। এ বার সদস্যদের মধ্য থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন সাতজন। এ ছাড়াও এই এলাকা থেকে নির্বাচিত আমতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ করিম খান এবং তৃণমূলের আরও এক কর্মী নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র পেশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ৯ জন নির্দল প্রার্থীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিদায়ী পঞ্চায়েতের প্রধান হাসেম আলি খান।
হাসেম বলেন, ‘‘প্রার্থী নির্বাচন করতে গিয়ে দলীয় নেতৃত্বের একটা বড় অংশ গোষ্ঠীবাজি করেছেন। যাঁদের পায়ের নীচে মাটি নেই বেশিরভাগ আসনে তাঁদেরই প্রার্থী করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে আমরা নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র পেশ করেছি। প্রমাণ করব আমরাই আসল তৃণমূল।’’
কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েতে তৃণমূলের কোন্দল দীর্ঘদিনের। এ বার প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা চূড়ান্ত আকার নেয়। পুরনো ১০ পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে থেকে মাত্র তিন জনকে প্রার্থী করা হয়েছে। বাকিরা সবাই নতুন। বাদ পড়েন প্রধান হাসেম আলি খানও। পুরনোদের মধ্যে রাখা হয় যমুনা মণ্ডল, সাবিনা খাতুন এবং প্রভাস দলুইকে। যমুনাদেবী উপ-প্রধান এবং প্রভাসবাবু পঞ্চায়েতের সদস্য ও দলের অঞ্চল সভাপতি। কিন্তু তাঁরা হাসেমের নেতৃত্বে নির্দল হিসাবে মনোনয়নপত্র পেশ করেন।
তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব অবশ্য জানান, হাসেমের আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছিল। তাই তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। একই ঘটনা ঘটেছে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ করিম খানের ক্ষেত্রেও। তাঁর আসনটিও মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁকেও প্রার্থী করা হয়নি। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, করিম খানের আসনে তাঁর স্ত্রীকে পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
পাল্টা জবাবে হাসেম খান বলেন, ‘‘আমাদের দলনেত্রী বলেছিলেন যোগ্য যে সব পদাধিকারীর আসন সংরক্ষিত হয়ে গিয়েছে তাঁদের পাশের কোনও কেন্দ্রে প্রার্থী করতে হবে। আমার আর করিমের ক্ষেত্রে সেটা হল না। অথচ উপযুক্ত বিকল্প আসন আমাদের ছিল।’’ করিমের স্ত্রীকে প্রার্থী করার প্রস্তাব প্রসঙ্গে হাসেম বলেন, ‘‘তিনি অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না জেনেই প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছিল।’’
হাসেম খানের বিষয়ে অবশ্য বয়সজনিত কারণকেও সামনে রাখতে চাইছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের দাবি, হাসেমকে অবসর নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে হাসেমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বয়স হলেও বাঘ বাঘই থাকে। সেটা আমি প্রমাণ করে ছাড়ব।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy