Advertisement
E-Paper

তৃণমূল-বিজেপিকে রুখতে উদ্যোগ হুগলিতে

পঞ্চায়েত ভোটে নিচুতলায় জোট বা দু’দলের সমঝোতা নতুন নয়। প্রতিবার পঞ্চায়েত ভোটেই রাজ্যের নানা প্রান্তে এ ছবি চোখে পড়ে। ইতিমধ্যে হাওড়ার আমতা বিধানসভা কেন্দ্রেও দু’পক্ষের সমঝোতার কথা সামনে এসেছে।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৯

মিছিল ডেকেছে সিপিএম। হোয়াটসঅ্যাপে সেই বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন কংগ্রেস নেতা!

পঞ্চায়েত ভোটে দু’পক্ষের জোট হয়নি। তবু তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ ঠেকাতে হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রিষড়া পঞ্চায়েতে দু’পক্ষ হাত ধরাধরি করেই চলতে চাইছে। বুধবার সন্ধ্যায় ওই পঞ্চায়েতের বাগপাড়া এলাকায় মিছিল ডেকেছিল সিপিএম। তাতে লোক জড়ো করলেন কংগ্রেস নেতা সাবির আলি! ওই নেতার কথায়, ‘‘শিয়রে শমন। এখন মানুষের জোট বেশি দরকার। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি।’’

পঞ্চায়েত ভোটে নিচুতলায় জোট বা দু’দলের সমঝোতা নতুন নয়। প্রতিবার পঞ্চায়েত ভোটেই রাজ্যের নানা প্রান্তে এ ছবি চোখে পড়ে। ইতিমধ্যে হাওড়ার আমতা বিধানসভা কেন্দ্রেও দু’পক্ষের সমঝোতার কথা সামনে এসেছে। হুগলির সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশও সেই বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন।

চণ্ডীতলা-১ ব্লকের গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতের আসনসংখ্যা ১৬। সিপিএম ১৩টিতে প্রার্থী দিতে পেরেছে। একটি আসনে প্রার্থী সিপিএম সমর্থিত নির্দল। কংগ্রেস দু’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সিপিএম শিবিরের খবর, বোঝাপড়ার ভিত্তিতে তিনটি আসনে (কংগ্রেসের ২টি এবং একটি সিপিএম সমর্থিত নির্দল) প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।

ওই ব্লকেরই হরিপুর, কৃষ্ণরামপুর বা নবাবপুরেও দু’দল‌ের আসন সমঝোতা হয়েছে। সিপিএমের স্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূল যা অত্যাচার শুরু করেছে, তাতে একজোট হয়ে লড়লে অনেক সুবিধা। তা ছাড়া তৃণমূলের খেয়োখেয়িও রয়েছে। সব মিলিয়ে মানুষ ভোট দিতে পারলে কিন্তু শাসকদলের হিসেব উল্টে যাবে।’’ গত নির্বাচনে এই ব্লকে ৯টির মধ্যে সিপিএম তিনটি এবং তৃণমূল ছ’টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল। আর কংগ্রেসের এক নেতা মানছেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছে। তৃণমূলের মতো দলকে বিদায় করতে মানুষের জোট গড়তে হবে।’’ চণ্ডীতলা-২ ব্লকেও পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা নিয়ে কথাবার্তা চলছে বলে কংগ্রেস নেতারা জানান।

তবে, এই জেলায় মোট ক’টি আসনে বা কোথায় কোথায় দু’দল সমঝোতার রাস্তায় হাঁটছে, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। দু’দলের নেতারা জানিয়েছেন, আলোচনা চলছে। জেলা কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর প্রীতম ঘোষ বলেন, ‘‘প্রিয়দা (প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি) বলেছিলেন, অত্যাচারী শাসককে সরাতে যেখানে নিজেদের প্রার্থী নেই, সেখানে যে শক্তিশালী তাকে সমর্থন করতে হবে।’’ তবে, বিজেপি-র সঙ্গে যে সমঝোতা হচ্ছে না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রীতম। তাঁর কথায়, ‘‘সেই সমর্থন অবশ্যই ধর্ম নিরপেক্ষ দলকে করতে হবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘যেখানে আমাদের প্রার্থী নেই, সেখানে অন্য বাম দল বা বাম-সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করা হবে। তা-ও যদি না-থাকে, তখন বিজেপি ও তৃণমূলকে যে হারাতে পারবে, তাকেই ভোট দিতে বলা হবে।’’

যাদের ঠেকাতে এই উদ্যোগ তারা কী বলছে?

জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত ওই সমঝোতাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা যতই অশুভ আঁতাত করুক, জিতবে তৃণমূলই। মানুষ ভোট দেবেন উন্নয়ন দেখে। কুৎসা করে আর সন্ত্রাসের মিথ্য গল্প ফেঁদে লাভ হবে না।’’ আর বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পালের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর তো আমাদের। সিপিএম-কংগ্রেস জোট করেও লাভ করতে পারবে না।’’

West Bengal Panchayat Election 2018 Panchayat Election Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy