Advertisement
E-Paper

লজঝড়ে পরিকাঠামো নিয়েই ডাইভিং অনুশীলন চুঁচুড়ায়

চলতি মরসুমে রাজ্য ডাইভিং চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি করে পদক জিতেছে এই ক্লাবের মৌপ্রিয়া মিত্র এবং অরিজিৎ সাহা। অরিজিৎ প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং, তিন মিটার এবং ১ মিটার স্প্রিংবোর্ডে স্বর্ণপদক জিতেছে।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ১২:১০
চুঁচুড়ার একটি অনুশীলনকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

চুঁচুড়ার একটি অনুশীলনকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

অনেকেই প্রতিশ্রুতিমান। কিন্তু অনুশীলনের জন্য আধুনিক পরিকাঠামো নেই হুগলি জেলায়। ঠিকভাবে অনুশীলন করতে তাই ভরসা কলকাতার হেদুয়ার সুইমিং পুল। এরমধ্যেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছে হুগলির ডাইভাররা। স্বপ্ন বুনছেন তাঁদের প্রশিক্ষকও।

হুগলিতে একমাত্র চুঁচুড়া সুইমিং ক্লাবে ডাইভিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সেখানে আবার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। ডাইভিংয়ের দু’টি বিভাগ। একটি স্প্রিংবোর্ড। অন্যটি প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং। পুলে বিশেষ রকমের ১ মিটার এবং ৩ মিটার স্প্রিংবোর্ড থাকার কথা। এখানে দু’রকমের বোর্ড থাকলেও তা কাঠের। প্রশিক্ষকদের বক্তব্য, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামতে হলে কাঠের বোর্ডে অনুশীলন অবৈজ্ঞানিক।

প্ল্যাটফর্ম ডাইভিংয়ের ক্ষেত্রে কংক্রিটের তৈরি ৫, ৭.৫ এবং ১০ মিটার উচ্চতার তিনটি ‘প্ল্যাটফর্ম’ থাকার কথা। চুঁচুড়ার ক্লাবটিতে শুধুমাত্র ৫ মিটার উচ্চতার প্ল্যটফর্ম রয়েছে। কোচেদের আক্ষেপ, কম বয়সেই উঁচু বোর্ড থেকে ডাইভ দেওয়া শেখাতে হয়। অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সে উঁচু বোর্ড থেকে ডাইভ দেওয়া শুরু করলে চোট পাওয়ার ভয় থাকে। এখানকার ডাইভিং পুলটিও খুবই ছোট। প্রতিযোগিতামূলক ডাইভিং পুল কমপক্ষে ৬০ ফুট (১৮.২৯ মিটার) লম্বা এবং ৭৫ ফুট ১১ ইঞ্চি (২২.৮৯ মিটার) চওড়া হয়। চুঁচুড়ার পুলটির আয়তন লম্বায় ৩০ এবং চওড়ায় ২৫ ফুট। প্রশিক্ষক শেওড়াফুলি সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক সুখেন্দু দাস জানান, প্রতিভাবান ডাইভারদের কলকাতায় হেদুয়ায় অনুশীলন করতে নিয়ে যেতে হয়।

চলতি মরসুমে রাজ্য ডাইভিং চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি করে পদক জিতেছে এই ক্লাবের মৌপ্রিয়া মিত্র এবং অরিজিৎ সাহা। অরিজিৎ প্ল্যাটফর্ম ডাইভিং, তিন মিটার এবং ১ মিটার স্প্রিংবোর্ডে স্বর্ণপদক জিতেছে। মৌপ্রিয়া ৩ মিটার এবং ১ মিটার স্প্রিংবোর্ড ডাইভিংয়ে সোনা এবং প্ল্যাটফর্ম ডাইভিংয়ে রুপো জিতেছে। স্নেহা পাল ১ মিটার স্প্রিংবোর্ডে ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে। আগামী ২৮ থেকে ৩০ জুন পুনেতে জাতীয় বয়সভিত্তিক চ্যাম্পিয়নশিপে মৌপ্রিয়া এবং অরিজিৎ বাংলা দলে নির্বাচিত হয়েছে। আগামী রবিবার বাংলা দল পুনে রওনা হবে।

ডাইভার এবং তাদের অভিভাবকদের বক্তব্য, জেলায় উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হয়। শিক্ষার্থীদের স্কুল কামাই হয়। কলকাতায় যাতায়াত-সহ অন্যান্য খরচের জন্য বাড়তি টাকা লাগে। অসচ্ছল পরিবারের পক্ষে সমস্যা বেশি। ব্যান্ডেলের কেওটার বাসিন্দা অরিজিৎ সেখানকার একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা অমর সাহা সব্জি বিক্রেতা। মা বাসন্তীদেবী বলেন, ‘‘চুঁচুড়ায় যদি সব ব্যবস্থা থাকত, তা হলে প্র্যাকটিসের জন্য কলকাতায় ছুটে আসতে হত না।’’ এখন অবশ্য জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য বাংলা দলের সঙ্গে কলকাতাতেই অনুশীলন করতে হচ্ছে তাকে।

সুখেন্দুবাবু বলেন, ‘‘দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি ছেড়ে এখানে ফিরে এসেছি, শুধুমাত্র ডাইভিংয়ে সফল ছেলেমেয়ে তৈরি করার স্বপ্ন নিয়ে। চুঁচুড়ায় ক্লাবে উপযুক্ত পরিকাঠামোর জন্য যেখানে আবেদন জানানোর, জানাব। এখানকার ছেলেমেয়েরা অলিম্পিকের আসরে গিয়ে ঝাঁপাচ্ছে, এটাই আমার লক্ষ্য।’’

swimmer swimming club চুঁচুড়া Chuchura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy