সংঘর্ষে ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
কয়েক মিটার তফাতে বিজেপি-তৃণমূলের সভা। তাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেলে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল খানাকুলের চকের মোড় ও সংলগ্ন এলাকা। বোমাবাজি-মারামারি চলল বেশ কিছুক্ষণ। মারামারিতে জখম হলেন দু’দলের ১১ জন। তবে, বোমাবাজিতে কেউ হতাহত হননি। তৃণমূলের ‘হামলা’র প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সন্ধে থেকে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল জানান, অভিযোগমতো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের সমর্থনে চকের মোড়ের কাছে এ দিন পথসভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। তৃণমূলের সভা ছিল ওই আইনের প্রতিবাদে এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষে। কিন্তু গোলমালে কোনও দলই কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে মারাধর ও বোমাবাজির অভিযোগ তুলেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩টে নাগাদ চকের মোড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হন। কথা ছিল, দলের স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি কার্তিক পণ্ডিতের নেতৃত্বে সেখানে দলীয় পতাকা তুলে মিছিল করে একটু তফাতেই মনুগেড়েতে তাঁরা পথসভা করবেন। সেইমতো মনুগেড়ে মাইক বাঁধা হয়, চেয়ার পাতা হয়। কিন্তু তার আগেই গোলমাল। বাঁশ, লাঠি ও রডের আঘাতে বিজেপির মোট নয় কর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে দুর্যোধন সিংহ এবং সুদীপ মণ্ডলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাকিদের খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। তৃণমূলের দুই আহতের মধ্যে শেখ আহমদ আলি খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। গোলমালের সময় ওই এলাকায় পুলিশ কম ছিল। ফলে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। পরে বাহিনী আসে।
কার্তিকের অভিযোগ, “পতাকা উত্তোলনের আগেই তৃণমূলের নইমুল হকের (খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি) নেতৃত্বে ওই দলের ছেলেরা চারদিক ঘিরে ফেলে আমাদের একতরফা মারধর করে। বোমাবাজি করে। মনুগেড়েতে গিয়েও আমাদের মাইক এবং চেয়ার ভাঙচুর করে। পালাতে না-পারা আমাদের কয়েকজনকে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। আমাদের পাল্টা মারার কোনও সুযোগই ছিল না।’’ নইমুলের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ওদের মনুগেড়েতে সভা হওয়ার কথা থাকলেও চকের মোড়ে আমাদের সভা ভণ্ডুল করতেই ওরা জড়ো হয়েছিল। ওরাই প্রথম আমাদের কয়েকজন কর্মীকে মারধর করে।’’
একইসঙ্গে অবশ্য ওই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘তারপর কি আমরা ছেড়ে দেব! প্রতিরোধ করেছি।” ঘটনা নিয়ে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “বিনা প্ররোচনায় তৃণমূল আমাদের সভা ভণ্ডুল করে ভাঙচুর এবং কর্মীদের মারধর করেছে। সভা হচ্ছিল পুলিশের অনুমতি নিয়েই।’’
পক্ষান্তরে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের দাবি, “আমাদের কর্মসূচি যেখানে চলছিল, সেখানে ওরা জমায়েত হয়ে পায়ে পা লাগিয়ে অশান্তি করল। বিজেপি সন্ত্রাস করে টিকে থাকতে চাইছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy