বছর বারোর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে মাস দুয়েক আগে তার ক্যারাটে প্রশিক্ষককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
একই অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হল ওই নাবালিকার এক নিকটাত্মীয়কে।
বেনজির এই ঘটনাটি হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের। ওই নাবালিকা গত মার্চে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। পিতৃত্বের দায় নিতে অস্বীকার করায় ক্যারাটে প্রশিক্ষক নুপূর কর্মকারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিল নাবালিকার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২২ মার্চ পুলিশ নুপূরবাবুকে গ্রেফতার করে। তিনি এখনও জেল-হাজতে রয়েছেন।
নাবালিকার নিকটাত্মীয়কে গ্রেফতার করা হল কেন?
পুলিশের দাবি, হাওড়া আদালতের নির্দেশমতোই নুপূরবাবুকে গ্রেফতারের পরে তাঁর ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। দিনকয়েক আগে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট মিলেছে। তাতে জানানো হয়েছে, ওই নাবালিকার কন্যাসন্তানের বাবা নুপূরবাবু নন। আগেই গ্রামবাসীদের একাংশ ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন নাবালিকার ওই নিকটাত্মীয়ের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এ বার ওই নিকটাত্মীয়কে ধরা হল। তাঁরও ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে। এ দিনই ধৃতকে হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল-হাজতের নির্দেশ দেন।
কিন্তু নুপূরবাবুর কী হবে? জেলা পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, তিনি যাতে জামিন পান, ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়ে এ বার আদালতে সেই আবেদন করা হবে।
বছর চল্লিশের নুপূরবাবু রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মী। আদতে পুরুলিয়ার বাসিন্দা হলেও জগৎবল্লভপুরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। সেখানে ক্যারাটের প্রশিক্ষণও দিতেন। ৬ বছর বয়স থেকে ওই নাবালিকাও সেখানে প্রশিক্ষণ নিত। তার পরিবারের দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারিতে নাবালিকা সন্তানসম্ভবা বলে তাঁরা জানতে পারেন। নাবালিকাই তাঁদের কাছে নুপূরবাবুর নাম বলে। থানায় নুপূরবাবুর নামে অভিযোগ দায়ের হয়।
নুপূরবাবুর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অন্তত ৬০। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পরে অনেক ছাত্রীই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। পুলিশের দাবি, সেই সময় ওই ছাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও নুপূরবাবুর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ মেলেনি। ডিএনএ পরীক্ষায় নুপূরবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগের সারবত্তা না-মেলায় স্বস্তিতে তাঁর পরিবারের লোকজন। তাঁর ভাই অঙ্কুর কর্মকার বলেন, ‘‘দাদা বিনা দোষে ৬৩ দিন ধরে জেলে রয়েছে। ওর নামে যে কলঙ্কের ছাপ পড়ল, ছাড়া পেলেও তা মুছবে কী করে?’’তবে, নুপূরবাবুর আইনজীবী শেখ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘নুপূরবাবুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি। উনি ডিএনএ পরীক্ষাতেও ছাড় পেয়েছেন। ওঁর চাকরিতে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy