শহর জুড়ে বেআইনি আবাসনে মদত-সহ অনিয়মের ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সোমবার মহকুমাশাসকের (শ্রীরামপুর) কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন রিষড়া পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান শঙ্করপ্রসাদ সাউ। পদত্যাগ করেন উপ-পুরপ্রধান সাকির আলিও। যিনি আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী। তাঁর বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ উঠছিল।
মুখ্যমন্ত্রিত্বে দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়া থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে চলেছেন, সিন্ডিকেট, তোলাবাজি-সহ কোনও দুর্নীতি আর বরদাস্ত করবেন না। এমনকী কড়া পদক্ষেপ করতেও যে পিছপা হবেন না, বোঝা গিয়েছিল মাসদুয়েক আগে। তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হন বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। এ বার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল রিষড়ার পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানকেও।
শঙ্করবাবু ও সাকিরের পদত্যাগ পত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করে মহকুমা শাসক রজত নন্দা জানান, এ ব্যাপারে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে। সোমবার বিকেলে শঙ্করবাবু পদত্যাগপত্রের প্রতিলিপি ফ্যাক্স মারফত হুগলি জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘কিছু কিছু অভিযোগ আসছিল। দলের তরফে ওঁদের পদ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। আগামী রবিবার রিষড়ায় এসে দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নতুন পুরপ্রধানের নাম ঘোষণা করবেন।’’ তবে, তৃণমূলের এক জেলা নেতা মনে করছেন, রিষড়ার পুরপ্রধান-উপ পুরপ্রধানকে সরানোর মাধ্যমে জেলায় বাকিদেরও বার্তা দিলেন দলনেত্রী। দুর্নীতির নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তিনি যে কাউকে রেয়াত করবেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
এ দিন শঙ্করবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। তবে, বেআইনি আবাসনে মদত দেওয়ার অভিযোগ তিনি আগে অস্বীকার করেছিলেন। সাকির বলেন, ‘‘দল আমাকে অনেক দিয়েছে। দলের নির্দেশেই পদত্যাগ করেছি। কোনও খেদ নেই।’’
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, শুধু বেআইনি আবাসনে মদত দেওয়াই নয়, পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে পুরসভায় পিওন ও সাফাইকর্মী নিয়োগেও অনিয়মেরও অভিযোগ ওঠে। পুর দফতর নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয়। নির্মাণ বাবদ পুরসভার তরফে সরকারের ঘরে যে টাকা পৌঁছনোর কথা, তিন বছর ধরে তা জমা পড়েনি। সাকির এ সবে প্রচ্ছন্ন মদত দিতেন বলে অভিযোগ দলের একাংশের। দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে ক্ষুণ্ণ মমতা তাঁদের পদত্যাগের জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ দেন ।
গত বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপনবাবু রিষড়া পুরভবনে গিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের কথা জানিয়ে দেন শঙ্করবাবু এবং সাকিরকে। শুক্রবার পুরপ্রধানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন সাকির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy