Advertisement
E-Paper

শৌচাগার দুর্নীতি, সরগরম বাইনান

‘নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে বাগনান-১ ব্লকের বাইনান পঞ্চায়েতে শৌচাগার তৈরিতে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছিল আগেই। কিন্তু এখনও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আপাতত বঞ্চিত উপভোক্তাদের শৌচাগার নির্মাণে জোর দিয়েছে প্রশাসন। এতে দুর্নীতির অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে সরব বিরোধীরা।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৩৪

‘নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে বাগনান-১ ব্লকের বাইনান পঞ্চায়েতে শৌচাগার তৈরিতে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছিল আগেই। কিন্তু এখনও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আপাতত বঞ্চিত উপভোক্তাদের শৌচাগার নির্মাণে জোর দিয়েছে প্রশাসন। এতে দুর্নীতির অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে সরব বিরোধীরা।

দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শঙ্করপ্রসাদ পাল। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী বঞ্চিত উপভোক্তাদের শৌচাগার করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে আরও তদন্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট বিডিওকে জমা দিত বলা হয়েছে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তৃণমূল পরিচালিত বাগনান-১ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সমীর সামন্ত বলেন, ‘‘বেশ কিছু ক্ষেত্রে টাকা তুলে নেওয়া হলেও কাজ হয়নি। এখন যদি ঠিকা সংস্থা বা প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা হলে কাজটি বন্ধ হয়ে যাবে। গরিব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই ঠিকা সংস্থাকে বলা হয়েছে বাকি কাজ করে দিতে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে ওই পঞ্চায়েতে ‘নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে ৬২৯টি শৌচাগার তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ৬২ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বরাদ্দ টাকার পুরোটা তুলে নেওয়া হলেও ১৩৩টি শৌচাগার তৈরি হয়নি। ৪৭টি শৌচাগারের ক্ষেত্রে একই ব্যক্তির নামে দু’বার করে টাকা তোলা হয়েছে। একটি ক্ষেত্রে একই ব্যক্তির নামে তিনবার টাকা তোলা হয়েছে। ২০৬টি শৌচাগার তৈরি হয়েছে আংশিক। পুরোপুরি তৈরি হয়েছে মাত্র ২৩৭টি শৌচাগার। তদন্তে এ-ও জানা যায়, প্রধানের সই করা বিল দেখিয়েই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ওই প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা তুলে নেয় ঠিকা সংস্থা। গ্রামবাসীদের থেকে অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এই তদন্ত করেছিলেন বিডিও-ই।

ওই পঞ্চায়েতে ২০১৩ সালে ক্ষমতায় আসে বামফ্রন্ট। ২২টি আসনের মধ্যে ১৪টি পায় বামফ্রন্ট। ৮টি কংগ্রেস। বছরখানেক আগে তৃণমূল দাবি করে, প্রধান সাবানা বেগম-সহ সাত জন সিপিএম এবং পাঁচ জন কংগ্রেস সদস্য তাদের দলে চলে এসেছেন। শৌচাগার নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরেই সুর বদলায় তৃণমূল। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই পঞ্চায়েত বামেদের হাতে রয়েছে। কেউ তৃণমূলে আসেননি। কিন্তু প্রধান দাবি করেন, তিনি তৃণমূলেই এসেছেন। বামেদের দাবি, এই পঞ্চায়েতে তারা ক্ষমতায় নেই।

ওই ঘটনার প্রায় দু’বছর বাদে তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে এখন জেলা প্রশাসন বঞ্চিত উপভোক্তাদের শৌচাগার তৈরি করে দিতে উদ্যোগী হওয়াতেই বিরোধীর দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলছে। বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রধান তৃণমূলের। পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূলের। দু’পক্ষের যোগসাজশেই দুর্নীতি হয়েছে। অথচ, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না। প্রধান সাবানা বেগমের দাবি, ‘‘টাকা দিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। আমি কিছু জানি না।’’

Corruption Toilet Nirmal Bangla নির্মল বাংলা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy