ভোগান্তি: জল পেরিয়ে পানীয় জলের খোঁজ জয়পুরে। নিজস্ব চিত্র
গত তিন দিন ধরে জয়পুরের সিয়াগড়ির শর্টকার্ট চ্যানেলের উপরের সেতুতে সংসার পেতেছেন অষ্ট ও তাঁর স্ত্রী অলকা।
শনিবার সামনে সাংবাদিক দেখে তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এইভাবে আর কতদিন?’ ওই দম্পতি জানান, জমানো টাকা দিয়ে মাছ ও আনাজ কিনে এত দিন রান্না চলছে। নিজেদের টাকায় ত্রিপল কিনেছেন তাঁরা। কিন্তু জমানো টাকা এখন প্রায় শেষ। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘এক মুঠো চিঁড়ে কিংবা ত্রিপল—কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি। কাল থেকে কী খাবো জানি না!’’ ওই সেতুর উপরে দুই দিকের ফুটপাথ আপাতত দখল হয়ে গিয়েছে। সেখানে সার দিয়ে টাঙানো ত্রিপল। বাড়ি জলে ডুবে যাওয়ায় কয়েকশো পরিবার ঠাঁই নিয়েছেন সেখানে। দুর্গত মানুষগুলির কেউ দিনমজুর। কেউ অন্যান্য হাতের কাজ করেন।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, গত সোমবার থেকে জল ছাড়তে শুরু করেছিল ডিভিসি। প্রথমে ১৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জল ছাড়ার পরিমাণ ছিল আড়াই লক্ষ কিউসেকে। ফল যা হওয়ার তাই হয়। দামোদরের ডান দিকের পাড় ঝাঁপিয়ে জল ঢোকে একের পর এক গ্রামে। হুগলির চব্বিশপুরের কাছে আপার রামপুর খালে প্রায় ২০০ ফুট ভাঙন দেখা দেয়। সব মিলিয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত উদয়নারায়ণপুরের ৯টি পঞ্চায়েত এবং আমতা ২ ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েত এলাকা জলবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
শুধু সিয়াগড়ি নয়, গ্রামীণ হাওড়ার জয়পুর, আমতা ও উদয়নারায়ণপুরের নানা জায়গায় ত্রাণ নিয়ে কমবেশি অভিযোগ উঠছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে রান্না করা খাবার দেওয়া হলেও, যাঁরা বাড়ির ছাদে, নদীর বাঁধে কিংবা পাকা সেতুর উপরে রয়েছেন তাঁদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী যায়নি বলেই অভিযোগ। আমতা ২ ব্লকের চিৎনানের বাসিন্দা হামিদা বিবির ক্ষোভ, ‘‘ঘর ডুবে গিয়েছে। কিন্তু একটা ত্রিপলও সাহায্য পাইনি। বাধ্য হয়ে পরিবারের বাকিদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে রয়েছি।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, জলবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ফলে দুর্গতদের সংখ্যা হিসেব করা যাচ্ছে না। তবে যখন প্রয়োজন হচ্ছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ দিকে গ্রামবাসী এবং সেচ দফতরের তৎপরতায় রক্ষা পেল আমতা ২ ব্লকের নারিট, গাজিপুর, ন’পাড়া এবং কুশবেড়িয়া এলাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy