Advertisement
০৮ মে ২০২৪

গাড়ি সরানো নিয়ে বচসা, প্রহৃত পুলিশ

ট্রাফিক আইন না মানায় তার প্রতিবাদ করে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের হাতে পুলিশের হেনস্থা হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাধারণ মানুষের পুলিশের উপরে চড়াও হওয়ার ঘটনাও। তারই সর্বশেষ ছবি দেখা গেল রবিবার রাতে বালিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০০:৫৭
Share: Save:

ট্রাফিক আইন না মানায় তার প্রতিবাদ করে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের হাতে পুলিশের হেনস্থা হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাধারণ মানুষের পুলিশের উপরে চড়াও হওয়ার ঘটনাও। তারই সর্বশেষ ছবি দেখা গেল রবিবার রাতে বালিতে।

পুলিশ জানায়, রাস্তার উপরে গা়ড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজট লেগে গিয়েছিল। কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ কর্মী গাড়িটি সরিয়ে নিতে বলায় তাঁর সঙ্গে বচসা বাধে আরোহী এক মহিলা যাত্রীর। ওই পুলিশকর্মী কেন তাঁর ফোনে ঘটনার ছবি তুলছেন, সেই ‘অপরাধে’ তাঁকে থাপ্পড় কষান ওই মহিলার স্বামী। আছড়ে ভেঙে দেন ওই অফিসারের মোবাইলও।

এই ঘটনায় কাঁকিনাড়ার বাসিন্দা সুমনা দাস নামে ওই মহিলার স্বামী অভিষেক দাস ও ভাই অনির্বাণ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের সোমবার আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজত হয়। সুমনাদেবী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি।

রবিবার রাতে বালি ট্রাফিক গার্ডের যে অফিসারকে হেনস্থা হতে হয়েছে, দিন কয়েক আগে তিনিই রাস্তার মাঝখানে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করেছিলেন। সে সময়ে তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল এক যাত্রীর বিরুদ্ধে। এই ধরনের ঘটনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে চাপা ক্ষোভ।

পুলিশ সূত্রে খবর, তারকেশ্বর যাওয়া পুণ্যার্থীদের কারণে যানজট থাকায় রবিবার রাত ১০টা নাগাদ বালিখাল আইল্যান্ডে ডিউটি করছিলেন বালি ট্রাফিক গার্ডের এএসআই প্রবীর হোড়। তখন তিনি দেখেন, জি টি রোডে কিছু দূরে একটি হোটেলের সামনে অ্যাপ নির্ভর লাক্সারি ক্যাব দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে এসে প্রবীরবাবু চালককে বলেন গাড়িটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু অভিযোগ, সুমনাদেবী তা শুনতে রাজি হননি।

পুলিশের অভিযোগ, গাড়ি সরানো হবে না বলে চেঁচামেচি শুরু করেন সুমনাদেবী। এমনকী রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তাকে নিজের আত্মীয় বলে পরিচয় দিয়ে তিনি প্রবীরবাবুর চাকরি ‘খেয়ে নেওয়ার’ও হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তবে সংশ্লিষ্ট ওই শীর্ষকর্তা ঘটনার কোনও স্তরেই হস্তক্ষেপ করেননি।

পুলিশ জানায়, বচসার ঘটনা ও ওই গাড়ির ছবি নিজের মোবাইলে তুলছিলেন এএসআই প্রবীরবাবু। সে সময়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে বেরিয়ে আসছিলেন অনির্বাণ। অভিযোগ, কেন ছবি তোলা হচ্ছে জানতে চেয়ে প্রবীরবাবুকে প্রথমে ধাক্কা মারেন তিনি ও অভিষেক। এর পরে ওই অফিসারকে থাপ্পড় মেরে
তাঁর মোবাইলটি নিয়ে আছড়ে ভেঙে দেন অভিষেক।

কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে হেনস্থা হতে দেখে মারমুখী হয়ে তেড়ে আসেন স্থানীয় দোকানদার ও পথচারীরা। ততক্ষণে বালি ট্রাফিক ও বালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ক্যাবে চাপিয়েই সকলকে থানায় নিয়ে আসে। জনতাকে ক্ষেপতে দেখেই পালিয়ে যান অভিষেক। পরে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর দাবি, ‘‘ওই অফিসার উদ্ধত আচরণ করছিলেন। আর ছবি তুলতে দেখে মাথা গরম করে ওঁর গায়ে হাত দিয়ে ফেলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police beaten
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE